সরকারের সময় আর এক মাস, ক্ষমতায় আসছেন খালেদা : দুদু
বর্তমান সরকারকে এক মাসের মধ্যে হটানোর ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। বলেছেন, এরপর ক্ষমতায় আসবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
দুর্নীতির মামলায় কারাদণ্ড পাওয়া দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনায় এসব কথা বলেন দুদু।
আরও একটি এক এগারোর গন্ধ পাচ্ছেন বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের জবাবে দুদু বলেন, ‘গন্ধ পাচ্ছেন না, একমাস পরে আপনারা আর ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। বেগম খালেদা জিয়া আবার ক্ষমতায় আসবেন।’
কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, ‘সামনে পহেলা সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠার দিন। বিএনপির প্রতিষ্ঠা হয়েছে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য। সেপ্টেম্বর মাস গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার মাস। কত ধানে কত চাল এইবার টের পাবেন।’
‘আপনাদের এমন কোনো শক্তি নাই বেগম জিয়াকে আটকে রাখবেন। তিনি মুক্তি পাবেন বিএনপির নেতাকর্মীরা জীবনকে বাজি রেখে তার মুক্তির আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বে। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করেই আমরা নির্বাচনে যাব।’
‘প্রধানমন্ত্রী কি সুস্থ?’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের পাশাপাশি তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াও বঙ্গবন্ধুর হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত বলে প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ নিয়েও কথা বলেন দুদু। তার দাবি, প্রধানমন্ত্রী মানসিকভাবে সুস্থ নন বলেই এই অভিযোগ এনেছেন।
আগের দিন জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিদেশি দূতাবাসে চাকরি দেয়া, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করা যাবে না মর্মে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এর সবই করেছেন জিয়াউর রহমান।
আবার ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির একতরফা নির্বাচনে কুমিল্লার একটি আসন থেকে বঙ্গবন্ধুর খুনি ফারুক রহমানকে কুমিল্লার একটি আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করে আনা হয়। তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া আর তার ইচ্ছার বাইরে এটি সম্ভব ছিল না।
এই বিষয়গুলোর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়া সম্পূর্ণভাবে জড়িত ছিল। আর জাতির পিতার আত্মস্বীকৃত খুনি, তাকে সংসদে বসিয়েছিল জিয়াউর রহমানের স্ত্রী (খালেদা জিয়া)। …তার অর্থ কী দাঁড়াচ্ছে? জিয়া একাই নয়, তার স্ত্রীও এই হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল, এতে কোনো সন্দেহ নাই।’
এর জবাবে দুদু বলেন, “গতকাল গণমাধ্যমে নিউজ দেখে আমি একটু হতাশাগ্রস্ত। …গতকাল প্রধানমন্ত্রীর নিউজ যখন বিভিন্ন গনমাধ্যমে এসেছে তখন আমার কাছে মনে হয়েছে একটি সুস্থ মানুষের নেতৃত্বে বাংলাদেশ চলছে কি না।’
‘আমি সন্দেহের মধ্যে আছি। কারণ, ৭৫ এর হত্যাকাণ্ড যখন সংঘটিত হয় তখন বেগম খালেদা জিয়া নিতান্তই একজন গৃহবধূ। তখন তো বিএনপিও তৈরি হয় নাই। তাকে তার পরিবার ছাড়া আর বেশি মানুষ চিনতে পারত বলেও আমার মনে হয় না। কোনো কারণে তিনি এ হত্যাকাণ্ডের সাথে নিজেকে জড়িত করবেন প্রধানমন্ত্রী যদি ব্যাখ্যা করেন তাহলে আমার এই অস্থিরতা একটু হলেও কমবে।’
‘আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাড়ি চাই না, গাড়ি চাই না মন্ত্রিত্বও চাই না। কোনো কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী ৭৫ এর হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত বলেছেন, যদি ব্যাখ্যা করেন তাহলে আমি বাধিত হব। আর যদি ব্যাখ্যা করতে ব্যর্থ, হন তাহলে এই অপপ্রচারের জন্য দয়া করে পদত্যাগ করুন।’
“ছেলেমানুষির একটা সীমা থাকা দরকার। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) সেই সীমা অতিক্রম করেছেন। রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে আপনি বলেন ‘বদু কাকা’। আপনি তার বন্ধু কি না সেটা আমার জানা নেই, তার সাথে একই ক্লাসে একই ভার্সিটিতে কিংবা পারিবারিক সম্পর্ক আছে কি না তা আমার জানা নেই। যদি থাকে তাহলে আলাদা কথা। কিন্তু বি চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই ধরনের হালকা কথা তিনি পছন্দ করেন না। তিনি এর ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন।’
‘আমি মনে করি প্রধানমন্ত্রী হাস্যকর কথা বলার একটি রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।’
দুদু বলেন, “তাদের (আওয়ামী লীগের) যে সাধারণ সম্পাদক আছেন তিনিও একটি হাস্যকর। তিনি গতকাল বলেছেন, ‘আমরা আবার একটি এক এগারোর গন্ধ পাচ্ছি’। এর আগে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, এক এগারো তার আন্দোলনের ফসল। এখানে কোনটা সত্য তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাই।”
আয়োজক সংগঠন নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উপদেষ্টা সাঈদ আহমেদ আসলামের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ, সাবিরা নাজমুল প্রমুখ এ সময় বক্তব্য দেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন