সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় ঈদগা ময়দানে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ অনুষ্ঠিত

মুসলমানদের বৃহৎতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। মুসলিম উম্মাহর ঐক্য,শান্তি, সমৃদ্ধি, ভ্রাতৃত্ববোধ অটুট করে। বৃহৎতম এই ধর্মীয় উৎসবে ধনী, গরিব সব মানুষের মনপ্রাণ ঈদের আনন্দ উচ্ছ্বাসে মিলে যায়। প্রবৃত্তির দাসত্ব, লোভ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষসহ মনের পশুত্বকে পরাভূত করার শিক্ষা দেয় কোরবানির।

মহান আত্মত্যাগ, আত্মসমর্পণ এবং নিজেকে উৎসর্গ করার মহিমায় উদ্ভাসিত মুসলিম উম্মাহর বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা।

আল্লাহ তায়ালার প্রতি অপার আনুগত্য এবং তারই রাহে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের এক ঐতিহাসিক ঘটনার স্মরণে মুসলিম বিশ্বে ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়ে আসছে। মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর আত্মত্যাগ ও অনুপম আদর্শের প্রতীকী নিদর্শন হিসেবে কোরবানির রেওয়াজ।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নির্দেশে হজরত ইব্রাহিম (আ.) তার প্রাণপ্রিয় পুত্র হজরত ইসমাইলকে (আ.) কোরবানি করতে উদ্যত হয়েছিলেন। এই অনন্য ঘটনার স্মরণে কোরবানি প্রচলিত হয়। আরবি ‘কুরবান’ শব্দ থেকে কোরবানি। এর অর্থ—ত্যাগ, উৎসর্গ, বিসর্জন, নৈকট্যলাভ।

পরিভাষায় একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্যলাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট দিনে, নিদিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট ব্যক্তির পক্ষ থেকে নির্দিষ্ট পশু জবেহ করাকে উযহিয়্যা বা কোরবানি বলে। মনের পশু অর্থাৎ কুপ্রবৃত্তিকে পরিত্যাগ করা। মূলত আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য প্রয়োজনে নিজের প্রিয় বস্তুকে কোরবানি দেওয়ার প্রস্তুতির শিক্ষাই এ ঈদের আদর্শ।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে দ্বিধাহীনভাবে তার কাছে আত্মসমর্পণ এবং তার নির্দেশ শর্তহীনভাবে মেনে নেওয়াই হলো ঈদুল আজহার প্রকৃত শিক্ষা দেয়।পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সাতক্ষীরা মুনজিতপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে ৭ জুন শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় ঈদুল আজহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

হাফেজ খতিব আব্দুল খালেক এঁর ইমামতিতে ঈদুল আজহার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। ইমামের বয়ান শেষে বক্তব্য রাখেন, জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ।
আরো বক্তব্য রাখেন,সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।

এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শোয়াইব আহমাদ। আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্বোধন কর্মকর্তারা , জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, সহ কেন্দ্রীয় ঈদগা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাতক্ষীরা জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি বিশিষ্ট সমাজসেবক আলহাজ্ব ডা. আবুল কালাম বাবলা।

অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ পাড়, সদস্য আব্দুল আজিজ, আলেম-ওলামা সহ ধনী ,গরিব , সর্বস্তরের মুসলিম উম্মাহ। দোয়া ও মোনাজাতে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে দুহাত তুলে মুসলিম উম্মাহ জন্য দেশ ও জাতির কল্যাণ, সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়া মোনাজাত করা হয়। পরবর্তীতে একই স্থানে একাডেমী মসজিদে ঈদের দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮ টায় অনুষ্ঠিত হয়।

নামাজে ইমামতি করেন মুফতি দেলাওয়ার হোসাইন হুযাইফী। ঈদের নামাজের পর। কেন্দ্রীয় ঈদগা সংস্কার কাজের ফলক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ। সাতক্ষীরা পৌরসভার বাস্তবায়নে ও স্থানীয় সরকার বিভাগের অর্থায়নে এ সংস্কারের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ লক্ষ ৯৯ হাজার ৯ শ’ ৬৯ টাকা।