সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে ব্রাদার্স ব্রিক্সে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জরিমানা ও বন্ধ ঘোষণা

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে হাইকোর্টের আদেশ, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে কাগজপত্র ও অনুমতি বিহীন অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা করায় ইট প্রস্তুত ও ভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ এর ৪ ধারা মোতাবেক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় ও ভাটার সকল কার্যক্রম ভ্রাম্যমান আদালত কর্তৃক বন্ধ ঘোষণা করেন।

উপজেলার শীতলপুর গ্রামে অবস্থিত ব্রাদার্স ব্রিকস ওরফ সিয়াম ইটভাটাতে বুধবার (৪ জানুয়ারি) বেলা ২ টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার( ভূমি) আজহার আলী এবং সাতক্ষীরা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শরিফুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত ভ্রাম্যমান আদালত জরিমানা ও ভাটার সকল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেন।

আইন অমান্য করলে ভাটা মালিকদের প্রতি কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া এবং গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন। উপজেলার শীতলপুর গ্রামের আব্দুল ওয়াদুদ, আব্দুস সেলিম ওরফে বাবলু এবং শামসুল আলম কয়েস ৩ ভাই মিলে ২০০৩ সাল হতে ভূমিহীনদের নদীর চরের জায়গা দখল করে এবং কোন অনুমতি ব্যতীত ফসলের জমি নষ্ট করে একেবারে গ্রামের ভিতরে প্রভাব খাটিয়ে ভাটা পরিচালনা করে আসছিল।

যে কারণে ভাটার টায়ার পোড়ানো গুড়া এবং কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানোর ফলে পরিবেশ দূষণে এলাকার ফসল এবং জীবন ধারণের জন্য ব্যাপক ক্ষতি করে আসছিল। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী বছরের পর বছর জেলা প্রশাসক, উপজেলা প্রশাসনের নিকট একাধিকবার অভিযোগ করেও কোন লাভ হয়নি বরং নির্দেশ অমান্য করে বছরের পর বছর ভাটা পরিচালনা করে আসছিল।

এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ৯ নভেম্বর সাতক্ষীরা পরিবেশ অধিদপ্তরের সাতক্ষীরা জেলার সহকারি পরিচালক শরিফুল ইসলাম এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে ভাটাটি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুড়িয়ে দেয়। এরপর ধুরন্ধর ভাটা মালিক আব্দুল ওয়াদুদ ও আব্দুস সেলিম বাবলু মিলে মহামান্য হাইকোর্টে একটি রিট কে পুঁজি করে আবারো ভাটার কার্যক্রম শুরু করে। ভাটা মালিক শত শত লোকের কাছ থেকে কম দামে ইট দেওয়ার নাম করে কোটি কটি টাকা হাতিয়ে নেয়। পরেও ভুক্তভোগীদের ইট না দেওয়ার কারণে আদালতে একাধিক মামলা আছে।

পরে ভাটা পরিচালনায় দেউলিয়া হওয়ায় ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বছরে ২৫ লক্ষ টাকা চুক্তিতে ২ বছরের অগ্রিম ৫০ লক্ষ টাকা নিয়ে সৌদি প্রবাসী শীতল পুর গ্রামের আবদুস সবুরের নিকট লিজ প্রদান করে। বর্তমান ভাটাটি কোন কাগজপত্র ছাড়া এবং ডিসি ছাড়পত্র ছাড়া বছরের সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভাটা পরিচালনা করে আসছে। যে কারণে মহামান্য হাইকোর্ট গত ১৩ ডিসেম্বর দেশব্যাপী অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করার জন্য জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেন। তারপরও কোন কাগজপত্র ছাড়াই উপজেলা জুড়ে ইট ভাটা গুলোতে কাঠ এবং জ্বালানি নিষিদ্ধ টায়ারের গুড়া জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে আসলেও নেয়া হয় না কোন আইনি পদক্ষেপ।