সাতক্ষীরার তৎকালিন পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমানসহ ৪০ জনের নামে আদালতে মামলা

৩০ লাখ টাকা নিয়ে ইটভাটার অংশীদার না করে পুলিশের সহায়তায় বাড়ি থেকে তুলে এনে ইউনুছ আলী নামে এক ব্যবসায়িকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার দক্ষিণ ভাদিয়ালি গ্রামের সলেমান আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ বাদি হয়ে বুধবার (০৯ অক্টোবর ‘২৪) তৎকালিন জেলা পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমানসহ ৪০জনের নাম উল্লেখ ও ১২জন অজ্ঞাতনামা আসামীর বিরুদ্ধে আমলী -৪ আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।

বিচারক তনিমা মণ্ডল মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার অন্যতম আসামীরা হলেন, সাতক্ষীরার তৎকালিন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইলতুত মিশ, সদর সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তার, গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারান চন্দ্র পাল, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠণিক সম্পাদক কাজী আক্তার, জেলা ছাত্রলীগের তৎকালিন সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুল হাসান মামুন।

সাতক্ষীরা পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক জিয়াউর বিন যাদু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ভোমরা বন্দরের ব্যবসায়ি জিএম আমীর হামজা, কলারোয়া উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি আনিকুল, দেবহাটার কোমরপুরের আবুল কাশেমের ছেলে আব্দুল আলীম, জজ কোর্টের পিপি অ্যাড আব্দুল লতিফের ছেলে কামারবায়সা গ্রামের রাসেল।

জেলা জাতীয় পার্টির সহসভাপতি ও ভোমরা ইউপি চেয়ারম্যান ইসরাইল গাজী, জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আশাশুনি উপজেলার শরাপপুর গ্রামের রাজ্যেশ্বর দাস, একই উপজেলার শ্রীউলা গ্রামের যুবলীগ নেতা আলাউদ্দিন লাকী।

মামলার বিবরণে জানা যায়, কলারোয়া উপজেলার দক্ষিণ ভাদিয়ালি গ্রামের গোলাম রব্বানীর বিসমিল্লাহ ব্রিকস নামে একটি ইটভাটা আছে। ওই ভাটায় অংশীদার করার নামে ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর ও ২০ নভেম্বর গোলাম রব্বানী মামলার বাদির ছেলে ইউনুস আলীর কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা নেয়।

বারবার বলার পরও ইউনুসকে ভাটার অংশীদার করা হয়নি। একপর্যায়ে ২০১৮ সালের ২৪ মে রাত ১০টায় দিকে তৎকালিন পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইলতুত মিষ ও সদর সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তারের সহায়তায় পুলিশ পরিচয়ে ইউনুসকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় আসামীরা।

একপর্যায়ে তাকে ২৪ ম দিবাগত রাত একটার দিকে রামকৃষ্ণপুর থেকে বড়ালী যাওয়ার পথে কাঁচা রাস্তার উপর নির্যাতন করে গুলি করে হত্যা করা হয়। পরে তার লাশ সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। বিকেলে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে ময়না তদন্ত শেষে ইউনুসের লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ২০১৮ সালের ২৫ মে পুলিশ বাদি হয়ে নিহত ইউনুসসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে কলারোয়া থানায় একটি হত্যা মামলা (থানা মামলা নং-৪০, জিআর-১৮৩/১৮) দায়ের করেন। পরে ইউনুসের নাম অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়। তখন অনুকুল পরিবেশ না থাকায় মামলা করা যায়নি। বর্তমানে অনুকুল পরিবেশ পাওয়ায় মামলা দায়ের করা হলো।

সাতক্ষীরা জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. সুধান্য সরকার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।