সাতক্ষীরার দেবহাটায় অনুমোদনের আগেই যেনতেন ভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন, নেপথ্যে চেয়ারম্যান!
সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়া গরুর হাট উন্নয়নে প্রকল্প অনুমোদনের আগেই কাজ শেষ করা হয়েছে।হাটের পরিত্যাক্ত টয়লেট ভেঙে সেই ইট ব্যবহার করে যেনতেন ভাবে শেষ করা হয়েছে দুইটি প্রকল্প। আর কাগজে-কলমে থাকা প্রকল্পের সভাপতি এসব বিষয়ে কিছু জানেন না।
অভিযোগ রয়েছে পারুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের একক আধিপত্যে এ দুরবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, পারুলিয়া গরু হাট উন্নয়ন প্রকল্পে হাটের মোনাজাতের বাড়ী হতে দক্ষিণগামী মাদুর হাটা অভিমুখী পাকা ড্রেন নির্মান, হাটের সাইকেল গ্যারেজ হতে মসজিদ অভিমুখী পাকা ড্রেন নির্মান, হাটের ভেতরে বিভিন্ন রাস্তার সিসি ঢালাই, তরকারী চাঁদনী ও পান চাঁদনী উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দের জন্য উপজেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছে ইউনিয়ন পরিষদ। তবে এসব প্রকল্পের মধ্যে দুটি চাঁদনী ও ড্রেন নির্মান কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়েই হাটের চাঁদনী ও ড্রেন নির্মান করা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় মিস্ত্রি না নিয়ে বাহিরের লোক দিয়েই এই কাজ করানো হয়েছে। এই প্রকল্পের অনিয়ম রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তাদের।
পারুলিয়া নতুন গরু হাট এলাকার বাসিন্দা মো. মশিয়ার রহমান জানান, হাটের মধ্যে মসজিদের পাশে পুরাতন টয়লেট ছিল, সেটি ভেঙে ইটগুলো চাঁদনীর কাজে ব্যবহার করা হয়েছে এবং যেগুলো বেশি ছিল সেগুলো ট্রলিতে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, কিন্ত এখানে নতুন ইট দিয়ে সংস্কার করার কথা।
এদিকে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দের চারটি কাজ ইতিমধ্যে যেনতেন ভাবে শেষ হয়েছে। এরমধ্যে হাটের মসজিদের পাশে কিছু বালু ভরাট এবং একটি ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া যেন যেনতেন ভাবে চাঁদনী নির্মাণ করা হয়েছে । যার একটিতে ইতোমধ্যে বালু উঠে ফাটল ধরেছে। অপরটি আপরটি পুরাতন চাঁদনীর থেকে নিচু করে নির্মাণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এর আগে হাটে যতগুলো কাজ হয়েছে সবগুলোই স্থানীয় মিস্ত্রি দিয়ে করা হয়, কিন্ত এবার এলাকার মিস্ত্রি না নিয়ে বাহিরের লোক দিয়ে এই কাজ করানো হয়েছে, কাজের মান খুবই খারাপ। এই প্রকল্পের অনিয়ম রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তিনিসহ স্থানীয়দের।
এদিকে, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে কাছে করা আবেদনে দেখা যায় হাটের চাঁদনী উন্নয়ন প্রকল্পের একটির সভাপতি, ইউপি সদস্য হাসিনা খাতুন। তিনি বলেন আমি প্রকল্পের সভাপতি এটা আমার জানা নেই, আর কাজ হয়েছে কিনা? কিভাবে হয়েছে এটি জানার তো প্রশ্নই আসে না।
এসব বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক বাবু সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, উপজেলা সমন্বয় মিটিংয়ে এ সকল প্রকল্পের অনুমোদন হয়েছে। ইতোমধ্যে বালুভরাট, ড্রেন নির্মান এবং চাঁদনী নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজগুলো দ্রুত শেষ করা হবে।
টয়লেটের ইট দিয়ে কাজ করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে বাস্টার্ড আপনাদেরকে এসব তথ্য দিয়েছে সে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এসব বলেছে । টয়লেটটি পরিত্যক্ত, সেটি ভেঙে ইটগুলো ইউনিয়ন পরিষদে রাখা হয়েছে।
দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, পারুলিয়া গরুর হাটে কোন প্রকল্পের কাজ হয়েছে এমন তথ্য আমার কাছে নেই। তবে এসব বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন