সাতক্ষীরার শ্যামনগর-আশাশুনি আসন একীভূতকরণের প্রতিবাদে স্বারকলিপি প্রদান

সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলাকে একীভূত করে একটি সংসদীয় আসন গঠনের সরকারি প্রজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে স্বারকলিপি দিয়েছে শ্যামনগর উপজেলা জামায়াতে ইসলামী। বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে উপজেলা আমীর মাওলানা আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে দলীয় নেতাকর্মীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর এ স্বারকলিপি প্রদান করেন।

স্বারকলিপিতে বলা হয়, শ্যামনগর ভৌগোলিকভাবে বিস্তীর্ণ, জনবহুল এবং জলবায়ুগতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ একটি উপজেলা। দীর্ঘদিন ধরে জনগণের স্বার্থে এটি স্বতন্ত্র সংসদীয় আসন হিসেবে থাকার দাবি জোরালো ছিল। কিন্তু আশাশুনির সঙ্গে একীভূত করার সিদ্ধান্ত স্থানীয় জনগণের মতামতের পরিপন্থী। এতে জনদুর্ভোগ বাড়বে, প্রশাসনিক সেবা প্রদান জটিল হবে এবং উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে।

স্বারকলিপি প্রদান শেষে উপজেলা আমীর মাওলানা আব্দুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, স্বাধীনতার পর ১৯৭১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রায় ৩৯ বছর শ্যামনগর একটি স্বাধীন সংসদীয় আসন ছিল। কিন্তু ২০০৮ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সাতক্ষীরার পাঁচটি আসনকে চারটিতে রূপান্তর করে।

বর্তমানে আবারও শ্যামনগর-আশাশুনি একীভূত করার সিদ্ধান্ত সেই ষড়যন্ত্রেরই ধারাবাহিকতা, যা জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে। তিনি আরও বলেন, শ্যামনগরকে আলাদা আসন বা সাতক্ষীরা-৫ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। যদি তা সম্ভব না হয়, তবে পূর্বের নিয়মে শ্যামনগর-কালিগঞ্জ আসন বহাল রাখতে হবে।

স্থানীয়রা এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে জানান, শ্যামনগর একটি নদী-বিধৌত ও ভৌগোলিকভাবে বিচ্ছিন্ন এলাকা। এ অঞ্চলের মানুষ জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ইতিমধ্যেই ভোগান্তিতে রয়েছেন। এর সঙ্গে আশাশুনিকে একীভূত করলে জনসাধারণের যোগাযোগব্যবস্থা আরও ব্যাহত হবে এবং প্রশাসনিক সেবা পেতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে। এতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বৃদ্ধি পাবে।

স্বারকলিপি প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা জামায়াত নেতা শহিদুল ইসলাম, উৎসর্গ সোসাইটির চেয়ারম্যান গাজী আব্দুর রউফ, ছাত্র প্রতিনিধি মাছুম বিল্লাহসহ স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নেতৃবৃন্দ।