উদ্বেগজনক বৃদ্ধি

সাতক্ষীরায় এক গ্রামের এক পাড়ায় ২ বছরে সাতটি বাল্য বিয়ে!

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় অপ্রতিরোধ্য গতিতে বাল্য বিবাহ অব্যাহত রয়েছে। বিভিন্ন কারণে ক্রমান্বয়ে বাল্য বিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বিভিন্ন সুত্র থেকে জানা গেছে, সরকার বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ করে নারী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ণে ব্যাপক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এলক্ষ্যে বিনা মূল্যে পাঠ্যপুস্তক প্রদান, স্কুলগামী বালিকাদের উপবৃত্তি দিয়ে বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ করে দিয়েছে। জীবনমান উন্নয়নে প্রতিবছর উপজেলা পর্যায়ে সেলাই, বাটিক প্রশিক্ষণসহ বিনা মূল্যে সেলাই মেশিন প্রদান, হাসমুরগী পালনের প্রশিক্ষণ এবং ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করছে। সরকারের এই সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে ক্রমান্বয়ে বাল্য বিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিয়ে প্রতিরোধে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচলনা শুরুর প্রথম দিকে বাল্য বিয়ে শূন্যের কোটায় নেমে আসে। কিন্তু পরবর্তীকালে প্রভাবশালী লোকজনের সহায়তায় নানা অজুহাত তুলে ১/২টা করে বাল্য বিয়ে আরম্ভ হয়। কেউ বা বয়স বেশী দেখায়ে এভিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ে করে দাম্পত্য জীবন শুরু করে। আবার কেউ কেউ ম্যারেজ রেজিষ্ট্রারের কাছে মোটা টাকার বিনিময়ে ভূয়া কাগজপত্র নিয়ে দাম্পত্য জীবন শুরু করেছে বলে সুত্র জানায়। কেউবা মৌলভী ডেকে মৌখিক বিয়ে পড়িয়ে ঘর সংসার করছে।

এবিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে উপজেলার দক্ষিণ সোনাবাড়িয়া গ্রামের কোম্পানী পুকুরের দক্ষিণ পশ্চিম পাশে দেড়’শ জনসংখ্যার ছোট একটি পাড়ায় ২ বছরে সাতটি বাল্য বিয়ের খবর পাওয়া গেছে।

সুত্র মতে, ওই পাড়ার আরাপ আলীর পুত্র ইমরান (১৪) ১ মাস আগে উপজেলা সদরের গদখালী গ্রামে বিয়ে করে ১৩ বছর বয়স্ক বউ এনে ঘর সংসার করছে।
২ মাস আগে পাশের ইয়াকুব আলীর পুত্র ইমামুল (১৬) ভাদিয়ালী গ্রামে বিয়ে করে ১৭ বছর বয়স্ক কিশোরী বউ এনে ঘর সংসার করছে।

এদিকে, আনুমানিক ৪ মাস আগে কোম্পানী পুকুর পাড়ের শওকাত আলী তার সপ্তম শ্রেণীতে পড়ুয়া কন্যা লতা খাতুন (১৩) শার্শায় বিয়ে দিয়েছে।
আনুমানিক ১০ মাস আগে পাশের ভ্যান চালক আনারুলের ৮ম শ্রেণী পড়ুয়া কন্যা শারমিন (১৪) ব্রজবাকসায় বিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আর আনুমানিক ২ বছর আগে প্রবাসী রমজানের পুত্র সাকিব (১৫) কে লাউডুবি গ্রামে বিয়ে দেওয়া হয়েছে।
একই সময় কোম্পানী পুকুরের দক্ষিণ পাশের ব্রাকের বন্ধু চুলা প্রস্তুতকারক আলমগীরের পুত্র হাবিব (১৬) উত্তর সোনাবাড়িয়া গ্রামে বিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং হাবিব বর্তমানে ১ সন্তানের জনক।

স্থানীয় প্রভাবশালীদের রোষানলে পড়ার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। গ্রাম্য চৌকিদার, মেম্বরের সংগে সখ্যতা থাকার কারণে বাল্য বিয়ে গুলো সংঘটিত হচ্ছে বলে সুত্র জানায়।