সাতক্ষীরায় টিসিবি পণ্য বিক্রি হতো কালো বাজারে! ডিলার আটক
সাধারণ মানুষের জন্য সরকার কতৃক ভর্তুকি দেয়া বাজার ছাড়া কম মুল্যের টিসিবি পন্য কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে মালামাল কম বিক্রিসহ বিভিন্ন প্রতারণার দায়ে সাতক্ষীরায় টিসিবি ডিলারকে আটক করেছে পুলিশ।
সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মির্জা সালাহউদ্দিন জানান, অনেক দিন থেকেই খবর পাচ্ছিলেন জনগনের কাছে বিক্রির নির্ধারিত পরিমান পেয়াজ, চিনি, তৈলসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে আসার কথা থাকলেও কম পরিমান মালামাল এনে অর্ধেকের বেশী জনগনকে খালি হাতে ফেরত দিচ্ছিল টিসিবি ডিলার আয়ুব এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী সিরাজুল ইসলাম। সেই খবরের ভিত্তিতে বুধবার ভোরে পুলিশ স্পটে অবস্থান নেয় এবং প্রথমে কী পরিমান মালামাল থাকার কথা সেই তালিকা নেন এবং আছে কী পরিমান তা চেক করে ডিলারের বিশাল প্রতারণা বলে চিহ্নিত করে পুলিশ। বরাদ্দপত্র ও স্পটে নিয়ে আসা পণ্যে বিস্তর ফারাক দেখে পুলিশ ও উপস্থিত ভোক্তারা। তিনি অধিক লাভের আশায় কালোবাজারে পন্যগুলো ছেড়ে দেন। এটি সরাসরি জনগন ও রাষ্ট্রের সাথে প্রতারণা।
রাষ্ট্র ও জনগনের সাথে এই প্রতারণার জন্য এ ডিলারের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহনের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
অতি. পুলিশ সুপার সালাহউদ্দিন আরো জানান, শতশত মানুষের উপস্থিতিতে সিরাজুল ইসলামের ট্রাকে অভিযান চালিয়ে দেখা যায় তার আজকের বিক্রয়ের বরাদ্দকৃত তালিকায় ছিল চিনি ৩০০ কেজি স্পটে দেখা যায় ১৯৪ কেজি, কমপড়ে ১০৬ কেজি। মসুরের ডাল তালিকায় ছিল ৭০০ কেজি স্পটে দেখা যায় ২০২ কেজি, কমপড়ে ৪৯৮ কেজি। সয়াবিন তৈল তালিকায় ছিল ৮০০ লিটার পাওয়া যায় ৭৪০ লিটার, কমপড়ে ৬০ লিটার। পেয়াজ তালিকায় ছিল ৭০০ কেজি পাওয়া যায় ৪১৩ কেজি, কমপড়ে ২৮৭ কেজি। কম থাকা পণ্যগুলো এই প্রতারক ডিলার কালো বাজারের বিক্রি করতো অধিক মুনাফার আশায়।
উপস্থিত ক্রেতাদের মধ্যে মুসলিমা বেগম জানান, অনেকদিন ধরেই সবমালামালেই কম পাচ্ছিল এছাড়া রাতে মশার কামড় খেয়ে দাঁড়িয়ে থাকা সাধারণ মানুষ মালামাল ঠিকমতো পেতো না। প্রতিদিনই অল্প কিছু লোককে মালামাল দিয়েই শেষ বলে জানিয়ে দিতো।
আরেক ভোক্তা রাতুল ইসলাম জানান, সরকার দিচ্ছে কিন্তু এ ধরনের প্রতারকরা অধিক মুনাফার জন্য কালোবাজারে কমমুল্যের পণ্য বিক্রি করে এধরনের প্রতারণা করে চলেছে দীর্ঘদিন। এদের যথাযথ শাস্তি হওয়া উচিত।
অভিযুক্ত ডিলার সিরাজুল ইসলাম জানান, আসার পথে জেলা নাজিরকে কিছু মালামাল দিয়ে আসি, ফলে নির্ধারিত থেকে কম দেখাচ্ছে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের নাজির মো. শাহাবুদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সিরাজুল ইসলামকে তিনি চেনেন, কিন্তু টিসিবির মালামাল নেয়ার বিষয়টি সম্পুর্ণ মিথ্যা কথা।
পুলিশ জানায়, সাধারণ মানুষ একটু কম দামে পাওয়ার কারণে এই পন্য নেয়ার জন্য রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকে কিন্তু প্রতিদিন মালামাল না পাওয়ার অভিযোগ উঠলে পুলিশ কয়েকদিন নজরদারিতে রেখে বুধবার ভোরে সাতক্ষীরার শহরের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে আসা টিসিবি ডিলার আয়ুব এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী সিরাজুল ইসলামের ট্রাকে অভিযান চালায়। অভিযান চালিয়ে দেখে স্পটে আনা পন্যর সাথে দিনের বরাদ্দপত্রের মধ্যে মিল নেই।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন