সাতরাস্তা-মহাখালী সড়কের করুণ চিত্র
মগবাজার ফ্লাইওভারের একাংশ যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার পর সাতরাস্তা থেকে মহাখালী পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বেড়েছে। কিন্তু ভাঙাচোরা এই সড়কটি ধরে গাড়ি চালানো কষ্টকর হয়ে উঠেছে হাজারো গর্তের কারণে।
এই সড়কটি ঠিক কবে শেষ মেরামত করা হয়েছিল, সেটা জানে না স্থানীয়রা। আর দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে সড়কের এখানে সেখানে ছোট ছোট গর্গ বা পিচ গলে জমাট হয়ে ঢেউ লেখানো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এর মধ্যে চলতি বর্ষায় বৃষ্টিতে এসব গর্ত চাকার আঘাতে ভেঙে ভেঙে আরও বড় হয়েছে, ঢেউ খেলানো পিচগুলোর জায়গাতেও ভেঙেছে সড়ক। এই সড়ক ধরে চলাচল করাটা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।
সাম্প্রতিক বৃষ্টির পর তৈরি হয়েছে বিশাল বিশাল গর্ত। আর সম্প্রতি দুই পাশের ফুটপাত মেরামত কাজ শুরুর পর সেখান থেকে তোলা টালি আর ইটের টুকরো এসব গর্তে ফেলে পরিস্থিতি মোকাবেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু এতে ভোগান্তি কমেনি এতটুকু, বরং বেড়েছে ক্ষেত্রবিশেষে।
মূল সড়ক সংস্কারের আগে ফুটপাত মেরামত কাজ শুরুর পর হেঁটে চলা মানুষের ভোগান্তি আরও বেড়েছে। কারণ, ফুটপাতের বদলে এখন ভাঙা সড়ক দিয়েই হাঁটতে হচ্ছে পথচারীদের।
ফুটপাতে খুড়ে রাখা মাটির স্তূপ করে রাখায় তেজগাঁও এলাকা সংলগ্ন মূল সড়কের পাশ ধরে যাচ্ছিলেন কয়েকজন পথচারী। মূল সড়কের সব লেন খালি থাকা সত্ত্বেও এ সময় পিছন থেকে একটি প্রাইভেটকার তাদের প্রায় গা ঘেঁষে চলে যায়। পরে সেই প্রাইভেটকারের চালক নাহিদ আহমেদ বলেন, ‘হঠাৎই সড়কের মাইদ্দে একটা গর্ত দেখলাম। ঐটা থেইকা বাঁচতে গাড়ি বামে চাপায় দিসি।’
এই সড়কটি যথেষ্ট চওড়া হলেও দিনভর এই সড়কে যানজট বেঁধে থাকে। এর প্রধান কারণ হাজারো গর্তের কারণে স্বাভাবিক গতিতে গাড়ি চলতে না পারা।
সাতরাস্তা-মহাখালীর সড়কের ভাঙন ধরেছে বহু বছর ধরে। বিশেষ করে তিব্বত, নাবিস্কো ও মহাখালী বাসস্ট্যান্ডের আশেপাশের পরিস্থিতি বেশি খারাপ। এরকম ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে দুই অথবা তিন চাকার গাড়ি চালকদের বিপদটাই যেন একটু বেশি।
সাতরাস্তা থেকে মহাখালীর দিকে অথবা মহাখালি থেকে সাতরাস্তা পর্যন্ত চোখের দেখায় মসৃণ মনে করে গাড়ি টানতে গেই হবে বিপত্তি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই রাস্তার ঠিক মাঝ বরাবর হঠাৎই পড়বে ভাঙা। অথবা, স্বাভাবিক গতিতে কোনো গাড়ির আনুমানিক ১০ ফুট দূর দিয়ে চালালেও আকস্মিক এই বিপজ্জনক গর্তগুলো গাড়ির চালককে হতবুদ্ধি করে দিতে যথেষ্ট।
মোটর সাইকেল চালক আকিবুর রহমান মানিক বলেন, ‘একদিন বন্ধুকে নিয়ে মহাখালীর দিকে যাচ্ছিলাম। তেজগাঁওয়ে সিগন্যাল ছাড়ার পর ফাঁকা পেয়ে সিএনজির পিছন থেকে সামান্য গতি বাড়িয়ে আগে যাব, এমন সময় রাস্তার ঠিক মাঝে বড় একটা গর্তের মধ্যে বাইকের সামনের চাকায় প্রচণ্ড ঝাঁকি খাই। কপাল ভালো, বাইক নিয়ে পড়তে পড়তে বেঁচে গেছি। নয়তো পাশের লেনের বাস মাথার উপরে দিয়ে যেত।’
মহাখালী সড়কে চালকরা ঝুঁকিতে রয়েছের স্বীকার করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান সহকারী প্রকৌশলী সৈয়দ কুদরত উল্লাহ বলেন, ‘আমার ইতিমধ্যে সড়কের কাজ হাতে নিয়েছি। বৃষ্টির কারণে কাজ করতে কিছুটা সমস্যা হলেও, খুব শিগগির কাজ শেষ করতে পারব।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন