সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে তাকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) কমিশন সচিবালয়ে এ ঘোষণা দেন তিনি।
সিইসি বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনে দুটি মনোনয়নপত্র পেয়েছি, দুটিই আমরা যাচাই-বাছাই করেছি; তার মধ্যে একটি গ্রহণযোগ্য বলে মনে করেছি। এ সময় আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আর কোনো প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ থেকে পাঁচ বছরের জন্য তিনি স্বীয় পদে অধিষ্ঠিত হবেন।
এর আগে রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনে যায় আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল। পরে এ দলটি প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর নামে মনোনয়নপত্র দাখিল করে।
নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী রোববার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় ছিল।
আগামী ২৩ এপ্রিল বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হবে। তার উত্তরসুরি হচ্ছেন মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু।
সংবিধান অনুযায়ী, সংসদ সদস্যরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য প্রার্থীকে ভোট দেন। আর রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থীর সমর্থক ও প্রস্তাবক হতে হয় সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে। বিরোধী দল জাতীয় পার্টি প্রার্থী দেবে না বলে আগেই জানিয়েছে। আর সংসদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীই নির্বাচিত হবেন। যেহেতু অন্য কোনো দল থেকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন করার কোনো আগ্রহ ছিল না, সেহেতু এবারও আওয়ামী লীগ যাকে মনোনীত করবে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার কথা।
এর আগে গত বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদ ভবনে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনীত করার একক ক্ষমতা দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেয়া হয়।
কে এই সাহাবুদ্দিন চুপ্পু
পাবনার সন্তান মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর জন্ম ১৯৪৯ সালে। তিনি ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর কারাবরণ করেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ১৯৮২ সালে বিসিএস ক্যাডার হিসেবে বিচার বিভাগে যোগ দেন। বিচারকের বিভিন্ন পদে চাকরি শেষে ২৫ বছর পর ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন।
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পরপরই আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা হয়। ওই সময় হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনাও ঘটে। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ওইসব ঘটনার তদন্তে একটি ‘কমিশন’ গঠন করা হয়, যার প্রধান ছিলেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন।
সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আওয়ামী লীগের সবশেষ জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এক পুত্রসন্তানের জনক এবং তার স্ত্রী প্রফেসর ড. রেবেকা সুলতানা সরকারের সাবেক যুগ্ম সচিব।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন