সিজারে শিশু জন্ম দেওয়ার কারণে বিলুপ্ত হতে পারে মানব প্রজাতি!
প্রাকৃতিকভাবে সন্তান প্রসব না করে পেটে কেটে বের করার কারণে মানব শিশুদের মধ্যে বিকাশগত বিশৃঙ্খলা, মানসিক সমস্যা এবং আসক্তিমূলক আচরণ দেখা দিচ্ছে। এমনটাই দাবি করেছেন বিশ্বখ্যাত চিকিৎসাবিদ মাইকেল ওডেন্ট। যার বয়স এখন ৮০ বছর। অথচ তিনিই চিকিৎসা বিদ্যার গোঁড়ামিগুলোর বিরুদ্ধে লাড়াই করে গেছেন আজীবন। তিনিই সর্বপ্রথম প্রসবের পর সন্তানকে তার মায়ের বুকে রাখার গুরুত্ব সম্পর্কে সজাগ করেছেন। এবং নারীদেরকে বেদনাহীনভাবে সন্তান প্রসবের জন্য গরম পানির পুলে সন্তান প্রসব করতে উৎসাহিত করেছেন।
সেই তিনিই এবার বলছেন অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে মানব প্রজাতির ভবিষ্যত অন্ধকার হয়ে পড়ছে। এর ফলে মানুষ বিবর্তনের একটি ভিন্ন কানাগলিতে ঢুকে পড়েছে। তার এই দাবির স্বপক্ষে তিনি সিজারের মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশুদের মধ্যে অটিজম বা বৈকল্যজনিত মানসিক বিশৃঙ্খলার মতো রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন।
অবশ্য এটা খুব আশ্চর্যের নয় যে, তিনি এমন হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। ১৯৫০ এর দশকের ফ্রান্সের এই বিখ্যাতি চিকিৎসাবিদ প্রাকৃতিকভাবে সন্তান প্রসবের আন্দোলনেরও পথিকৃত।
১৯৮৫ সালে দক্ষিণ প্যারিসের পিথভিয়ারস হাসপাতাল থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি বিশ্বব্যাপী ধাত্রী এবং ডাক্তারদের লেকচার দিয়ে লেখালেখি করে আসছেন। গত ১০ বছরে তিনি ৫টি বই লিখেছেন।
তাঁর দাবি এখন যেভাবে কৃত্রিমভাবে সন্তান জন্ম দেওয়া হচ্ছে এর ফলে মানুষের বিবর্তন প্রক্রিয়ায়ও বিকৃতি ঢুকে পড়েছে। কারণ এই প্রক্রিয়ায় এমন নারীও সন্তান জন্মদানে সক্ষম হচ্ছেন যিনি হয়তো স্বাভাবিকভাবে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারা যেতেন।
এর ফলে প্রাকৃতিক নির্বাচনের ( laws of natural selection) যে আইন আছে তাতে হস্তক্ষেপ করছে মানুষ। বিশ শতকের শুরুর দিকে যে নারীটি প্রাকৃতিকভাবে সন্তান জন্ম দিতে পারতেন না তিনি মারা যেতেন। অন্যদিকে, গ্রামের যে নারীটি প্রাকৃতিকভাবে সন্তান জন্ম দিতে সক্ষম ছিলেন তিনি সহজেই ১২টি পর্যন্ত সন্তান জন্ম দিতে পারতেন। কিন্তু এখন কেউ কয়টি সন্তান জন্ম দিবেন তা শুধু শারীরিক সক্ষমতার ওপরই নির্ভর করে না। বরং প্রযুক্তিও এর অংশীদার এখন। যার ফলে অনেক দুর্বল শিশুও জন্ম নিচ্ছে।
এর ফলে এমনকি খোদ মানব প্রজাতির অস্তিত্বও বিলুপ্ত হওয়ার হুমকিতে পড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। যে বইয়ে তিনি এই দাবি করেছেন সেটির নাম The Birth of Homo, The Marine Chimpanzee by Michel Odent।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন