‘সিনহা ওই চিঠি না দিলে এই পরিস্থিতি তৈরি হতো না’
বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহা অস্ট্রেলিয়ার যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের কাছে ওই চিঠি না দিলে আজকের এই পরিস্থিতি তৈরি হত না। তার ওই বক্তব্যের কারণে সৃষ্ট বিভ্রান্তি দূর করতেই এই (সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের) বিবৃতি দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। সোমবার বিকেলে সুপ্রিম কোর্টের জাজেজ লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত এক ফুলকোর্ট সভায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা একথা বলেন।
পরে সংশ্লিষ্ট সূত্র ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির বক্তব্যের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন। ওই ফুলকোর্ট সভায় আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রধান বিচারপতির ছুটি নেওয়া এবং বিদেশ যাওয়ার প্রাক্কালে দেওয়া বক্তব্যের প্রেক্ষাপট নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের দেওয়া বিবৃতির বিষয়ে উভয় বিভাগের বিচারপতিদের অবহিত করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি।
এর আগে গত ১৪ অক্টোবর শনিবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার একটি বিবৃতির প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন একটি পাল্টা বিবৃতি প্রদান করে। বিবৃতিতে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও নৈতিক স্খলনসহ ১১টি অভিযোগ এবং তার সঙ্গে আপিল বিভাগের অন্য বিচারপতিদের না বসার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, ছুটিতে থাকা প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা শুক্রবার রাতে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। সস্ত্রীক যাওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত একাই তিনি অস্ট্রেলিয়া যান।
অস্ট্রেলিয়া রওনার পথে হেয়ার রোডের বাসভবনের সামনে প্রধান বিচারপতি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি অসুস্থ না। আমি পালিয়ে যাচ্ছি না। বিচার বিভাগের স্বার্থে আমি স্বেচ্ছায় বিদেশ যাচ্ছি। আবার ফিরে আসব। প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বোঝানো হয়েছে।’
এসময় সাংবাদিকদের দেওয়া এক লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি। কিন্তু ইদানিং একটা রায় নিয়ে রাজনৈতিক মহল, আইনজীবী, বিশেষভাবে সরকারের মাননীয় কয়েকজন মন্ত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে ব্যক্তিগতভাবে যেভাবে সমালোচনা করেছেন, এতে আমি সত্যিই বিব্রত।’
এস কে সিনহা বলেন, ‘সেই সঙ্গে আমি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়েও একটু শঙ্কিত বটে। কারণ, গতকাল প্রধান বিচারপতির কার্যভার পালনরত দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রবীণতম বিচারপতির উদ্ধৃতি দিয়ে মাননীয় আইনমন্ত্রী প্রকাশ করেছেন যে, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি অচিরেই সুপ্রিম কোর্টের প্রসাশনে পরিবর্তন আনবেন।’
‘প্রধান বিচারপতির প্রশাসনে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি কিংবা সরকারের হস্তক্ষেপ করার কোনো রেওয়াজ নেই। তিনি শুধুমাত্র রুটিন মাফিক দৈনন্দিন কাজ করবেন, এটিই হয়ে আসছে’ যোগ করেন তিনি।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির প্রশাসনে হস্তক্ষেপ করলে এটি সহজেই অনুমেয় যে, সরকার উচ্চ আদালতে হস্তক্ষেপ করছে এবং এর দ্বারা বিচার বিভাগ ও সরকারের মধ্যে সম্পর্কের আরও অবনতি হবে। এটি রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন