সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় আওয়ামী লীগ, লক্ষ্য তরুণ প্রজন্ম

ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ (সোশ্যাল মিডিয়া) মাধ্যমগুলোতে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা। পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট দিচ্ছেন মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এমনকি তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও।

দলের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নিয়মিত পোস্ট দেয়া হচ্ছে। ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’ নামের ফেসবুক পেজ থেকে প্রতিদিন দলীয় ও সরকারের বিভিন্ন সংবাদ শেয়ার করা হচ্ছে। পাশাপাশি দলের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমভিত্তিক বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা হচ্ছে।

‘ভরসা রাখুন নৌকায়’ এ লেখা সম্বলিত একটি অ্যাপের মাধ্যমে দলীয় নেতাকর্মীরা নিজেদের প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন করছেন। পাশাপাশি ‘নৌকায় ভোট দিন’ এ লেখা সম্বলিত একটি অ্যাপও ব্যবহার করতে দেখা গেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্টে।

আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রচারের একটি বড় মাধ্যম। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের অধিকাংশই এসব মাধ্যমে সক্রিয়। তাই সঠিক তথ্য জানাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের বিকল্প নেই। পাশাপাশি সরকারবিরোধী অপপ্রচার মোকাবেলায় এটি অন্যতম সহায়ক মাধ্যম।

দলটির গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন উইং (সিআরআই) সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে সারা দেশের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ইন্টারনেটভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ স্থাপনে বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে সংসদ সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও জেলা আওয়ামী লীগের জন্য ল্যাপটপ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে বিভিন্ন কনটেন্ট তৈরি করা হচ্ছে।

সিআরআই সূত্র মতে, আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের সম্পর্ক স্থাপনই এ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য। পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারের বিষয়েও সজাগ দৃষ্টি রয়েছে দলটির।

সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা প্রতিদিনই নিজেদের কর্মকাণ্ডের ছবি ও তথ্য পরিবেশন করছেন এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে এখন সাত কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। প্রায় ১৩ কোটি মোবাইল ব্যবহারকারী রয়েছেন। পুরো বাংলাদেশ এখন ডিজিটালাইজড। ডিজিটালাইজড হওয়ায় প্রতিনিয়ত সবাইকে আমাদের সংবাদের বিষয়ে আপডেট রাখতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সবচেয়ে বেশি কার্যকর। এ বিষয়ে আমরা অনেক বেশি মনোযোগী। কারণ আমরা চাই মানুষ সঠিক তথ্য জানুক, সঠিক বিষয়টি জানুক এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারুক। আমাদের এ প্রচার কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত থাকবে।

আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, বাংলাদেশে প্রায় তিন কোটির মতো মানুষ ফেসবুকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সঙ্গে জড়িত। রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। আমরা চাচ্ছি আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ গত সাড়ে আট বছরে দেশের জন্য কী করেছে- এটি প্রতিটি স্তরের মানুষ জানুক। জানলেই মানুষ বুঝতে পারবেন আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পার্থক্য কী। তখন মানুষের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে।

তিনি বলেন, আমাদের দলের পক্ষ থেকে প্রচার চালানো হলো ‘ভরসা রাখুন নৌকায়’। ধর্ম ব্যবসায়ীরা বিষয়টি নিয়ে প্রচার চালালো ‘ভরসা রাখুন আল্লাহর ওপর’। ‘নৌকা’র সঙ্গে ‘আল্লাহ’কে নিয়ে এলো। এ ধরনের টুইস্ট, দুই নম্বরি ও প্রতারণা তারা করে যাচ্ছে। এগুলোও আমাদের মাথায় রাখতে হবে। কারণ প্রচারের উল্টো দিকে অপপ্রচারও আছে। সুতরাং এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।