সৌদি আরবে আগুনে পুড়ে নিহত হলো মাদারীপুরের জুবায়ের

সৌদি আরবের দাম্মামের হুফুফ শহরে একটি ফার্নিচারের কারখানায় আগুনে পুড়ে নিহত হয়েছে মাদারীপুরের জুবায়ের ঢালী। এখন নিহত সৌদি প্রবাসীর বাড়ীতে চলছে শোকের মাতম। জুবায়ের পরিবারের বড় সন্তান তার রয়েছে দুই সন্তান। অবুঝ শিশুরা জানেনা তারা কোনোদিন আর বাবাকে বাবা বলে ডাকতে পারবে না। তারা বাড়িতে আহাজারির কারণও জানে না। পরিবারের একটি দাবি দ্রুত লাশ বাড়িতে আনার। উপজেলা প্রশাসন লাশ আনাসহ সার্বিক সহযোগীতা করার আশ্বাস দিয়েছে।

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার আলিনগর ইউনিয়নের সস্তাল গ্রামের ইউনুস ঢালীর ছেলে জুবায়ের ঢালী সৌদি আরবের দাম্মামের হুফুফ শহরে একটি ফার্নিচারের কারখানায় আগুনে পুড়ে নিহত হয়েছে । নিহতের বাড়িতে চলছে এখন শোকের মাতম। কোন ভাবেই স্বজনরা মেনে নিতে পারছেনা এ বিয়োগ ব্যথা। ২০২১ সালে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ৩ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে জীবিকার জন্য পাড়ি জমিয়ে ছিলেন সৌদি আরবে। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে জুবায়ের সবার বড়। দুই সন্তানের জনক জুবায়েরের অল্প বয়সে চলে যাওয়া কোনোভাবেই কেউ মেনে নিতে পারছে না । ছেলে আবদুল্লাহ (৭) ও মেয়ে আয়শা (৪) বাবা হারানোর কষ্টটা এখনো বুঝে উঠতে না পারলেও সকলের আহাজারীর অনেক কষ্ট অনুভব করছে গভীরভাবে।

ছোট ভাই আকাশ বলেন , তার বড় ভাই ঋন নিয়ে বিদেশ গিয়েছিল ২০২১ সালে। ঋণের কয়েকটি কিস্তি দিতে পেরেছে মাত্র। করোনার করণে ঠিকমতো কাজ করতে পারেনি। অনেক কষ্ট করে দিন পার করেছিল তখন। ভাইয়ের একটি ছেলে ও একটি মেয়ে। সরকার সহযোগিতা না করলে ইয়াতিমদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

নিহতের বাবা ইউনুস ঢালী বলেন, আমার বাবারে আর দেখতে পারমু না। বাবা আমাগো ভাল রাখতে বিদেশে কত কষ্ট করছে। শেষ বিদায়টার সময় আমার বাবার কতনা কষ্ট হয়েছে। আমি এখন কি করবো। কিভাবে এত কষ্ট নিয়ে বেচে থাকবো।

স্ত্রী শারমিন আক্তার, এখন আমার সংসার কেমনে চলবে? আমি কি নিয়ে বেচে থাকবো। দুটি সন্তান কাকে বাবা বলে ডাকবে? এই ইয়াতিমদের ভবিষ্যত গড়বো কি দিয়ে। ব্যাংক থেকে যে ঋন নিয়েছিল তাই বা শোধ করবো কিভাবে?

কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিংকি সাহা বলেন, মরদেহ দেশে আনার জন্য যে ধরনের সহযোগিতা লাগবে উপজেলা প্রশাসন থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। এছাড়া বিদেশ থেকে যে অনুদান দেয়া হয় তার জন্যও সহযোগিতা করবো। পাশাপশি উপজেলা প্রশাসন বরবার কোন আর্থিক সহায়তা চাওয়া হলে সাহায্য করা হবে।