সৌদিকে কেন বেছে নিলেন ট্রাম্প?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর প্রথম বিদেশ সফরে এখন সৌদি আরবে রয়েছেন। এত দেশ থাকতে ট্রাম্প তাঁর প্রথম বিদেশ সফরের জন্য কেন সৌদি আরবকে বেছে নিলেন, তা নিয়ে নানা বিশ্লেষণ চলছে।
গতকাল শনিবার সৌদি আরবে পৌঁছান ট্রাম্প। রাজধানী রিয়াদে উষ্ণ অভ্যর্থনা পান তিনি। সৌদি আরবের পর ইসরায়েল, ফিলিস্তিন, বেলজিয়াম, ভ্যাটিকান ও সিসিলিতে যাবেন ট্রাম্প।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম বিদেশ সফরের জন্য সৌদি আরবকে বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক উদ্দেশ্য কাজ করেছে বলে মনে করেন কোনো কোনো বিশ্লেষক।
বিশ্লেষকদের ধারণা যে অমূলক নয়, তার প্রমাণ ট্রাম্পের সফরের প্রথম দিনই মিলেছে। এদিন সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র তার এযাবৎকালের সবচেয়ে বড় অস্ত্র চুক্তি সই করেছে।
সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মোট ৩৫ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তি হয়েছে। এর মধ্যে ১১ হাজার কোটি ডলার অস্ত্র বিক্রির চুক্তি।
চুক্তিটি সম্পর্কে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেছেন, ইরানের ক্ষতিকর প্রভাব রোখাই এই চুক্তির লক্ষ্য। প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম-সেবার এই প্যাকেজ সৌদি আরব, তথা গোটা উপসাগরীয় অঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তায় সমর্থন জোগাবে।
ক্ষমতায় যাওয়ার আগে অভিবাসী ও মুসলিমবিরোধী বক্তব্য দিয়েছিলেন ট্রাম্প। ক্ষমতায় বসেই অভিবাসী ও মুসলিমবিরোধী পদক্ষেপ নেন তিনি। এসব কর্মকাণ্ডে ট্রাম্পের ব্যাপারে মুসলমানদের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে।
আজ রোববার রিয়াদে আরব ইসলামিক আমেরিকান সম্মেলনে যোগ দেবেন ট্রাম্প। ইসলামের একটি শান্তিপূর্ণ রূপরেখার ব্যাপারে নিজের আশাবাদ সম্পর্কে বলবেন তিনি।
ট্রাম্পের সহযোগীদের ভাষ্য, প্রেসিডেন্টের ভাষণ বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দেবে। তাঁর ভাষণে শান্তি, প্রগতি ও সমৃদ্ধির একটি অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পাবে।
ট্রাম্প মুসলিমদের অপছন্দ করেন না—এমন একটি বিষয় এই সম্মেলনে তিনি প্রমাণ করতে চাইবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, উদ্দেশ্যমূলকভাবেই সৌদি আরবকে ট্রাম্পের প্রথম সফরের দেশ হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করে ট্রাম্প প্রশাসনের ওই কর্মকর্তা বলেন, গত বছরের নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরপরই ট্রাম্পের সফর নিয়ে সৌদি আরবের সঙ্গে কথাবার্তা শুরু হয়।
ট্রাম্প প্রশাসনের ওই কর্মকর্তার ভাষ্য, সৌদি আরবকে ট্রাম্পের প্রথম বিদেশ সফরের দেশ হিসেবে বেছে নেওয়ার কারণ হলো—দেশটি দুটি পবিত্র মসজিদের রক্ষক। এই সফর তাঁর ভাবমূর্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে সৌদি আরবের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এ বিষয়টিও হয়তো ট্রাম্প বিবেচনায় নিয়েছেন।
রিয়াদে আরব ইসলামিক আমেরিকান সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে জঙ্গিবাদ দমনের বিষয়টি রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের ওই কর্মকর্তা বলেন, জঙ্গিবাদের মতো সমস্যা মোকাবিলার উপায় নিয়ে আলোচনা শুরুর এক মোক্ষম স্থান হতে পারে এই সম্মেলন।
সম্মেলনে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অনেক দেশের নেতারা যোগ দিয়েছেন। এখানে সৌদি আরবের প্রভাব কাজে লাগিয়ে সবার অভিন্ন স্বার্থ নিয়ে আলোচনার সুযোগ আছে। এই সুযোগ যুক্তরাষ্ট্র কাজে লাগাতে চায় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন