সৌদিদের ১৩ শর্ত কাতারের প্রত্যাখ্যান

চলমান সংকট নিরসনে সৌদি আরবের নেতৃত্বে চারটি দেশের দেওয়া ১৩ দফা শর্ত প্রত্যাখ্যান করেছে কাতার। শনিবার রোমে এক সংবাদ সম্মেলনে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানি শর্তগুলো মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘কাতারকে দেওয়া চারটি আরব দেশের শর্তগুলো প্রত্যাখ্যাত। কারণ এগুলোতে সন্ত্রাস নির্মূল নয়, আমাদের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত করা হয়েছে।’
রোম সফরে থাকা কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, তার দেশ সংকট নিরসনে সংলাপের জন্য প্রস্তুত। কিন্তু তা হতে গ্রহণযোগ্য শর্তের ভিত্তিতে।
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকেই শর্তগুলোর বিষয়ে অবহিত। এটি কাতারের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকিস্বরূপ, বাকস্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ এবং কাতারকে তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে আসতে বাধ্য করার শামিল।’
আল থানি আরো বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, হুমকি দিয়ে বিশ্ব শাসন করা যায় না। বিশ্ব চলবে তার আপন আইন অনুযায়ী। এখানে বড়রা ছোট রাষ্ট্রকে হুমকি-ধামকির মধ্যে রাখবে, এটা মেনে নেওয়া যায় না।’
সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিশর কুয়েতের মাধ্যমে আল জাজিরা বন্ধ, দোহায় তুরস্কের সেনা ঘাঁটি বন্ধসহ কাতারকে ১৩টি শর্ত দেয়।

একই সঙ্গে তারা এসব শর্ত পূরণে ১০ দিন সময় বেধে দেয়। আগামী ৪ জুলাই এই মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার দু’দিন আগেই কাতারের পক্ষ থেকে এসব শর্ত পত্যাখ্যান করা হলো।
এদিকে, ১৩ শর্ত প্রত্যাখ্যানের পর সৌদি আরব কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবায়ের বলেছেন, ‘কাতার সন্ত্রাস ও চরমপন্থার মদতদাতা। তারা যা করছে, তাতে আমাদের ধৈর্যের সব বাঁধ অতিক্রম করেছে। যথেষ্ট হয়েছে, আর না।’
তিনি অভিযোগ করেন, সন্ত্রাসবাদ বন্ধ, জঙ্গিবাদে সহায়তা ও অর্থায়ন বন্ধ এবং অভ্যন্তরীণ হস্তক্ষেপ প্রশ্নে কাতার অঙ্গিকার ভঙ্গ করেছে।
এর আগে গত ৫ জুন সৌদি আরবসহ এই দেশগুলো সন্ত্রাসবাদে মদদ, মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি ও অভ্যন্তরণীণ হস্তক্ষেপের অভিযোগ এনে কাতারের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করে।
এরপর থেকেই কুয়েতের নেতৃত্বে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ কাতার সংকট নিরসনে কাজ করে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেন।
এছাড়া তিনি জাতিসংঘে রাশিয়া, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য এবং চীনের দূতদের সঙ্গেও বৈঠক করে কাতারের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান।