সৌদির ধুলা, পাকিস্তানের কুয়াশায় দিল্লিতে দুর্ভোগ!

ভারতের উত্তরাঞ্চলের একটি বড় অঞ্চলজুড়ে মারাত্মক বিষাক্ত ধোঁয়াশা বিরাজ করছে। এজন্য দেশটির পাঞ্জাব আর হরিয়ানার কৃষকদের দায়ী করা হচ্ছে।

কারণ তারা এ সময়ে ফসলের বর্জ্য পোড়ান। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, দিল্লির এই ভয়াবহ ধোঁয়াশার জন্য শুধু পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকরা দোষী নন, বৈরী প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান থেকে শুরু করে কুয়েত, ইরান এবং সৌদি আরবও সমান দায়ী! খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
নাসার উপগ্রহ চিত্রের বরাত দিয়ে বিজ্ঞানীরা বলছেন, গত ৪ দিন ধরে দিল্লির বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তর অসম্ভব ভারী হয়ে উঠেছে ধূলিকণায়। আর এসব ধূলিকণা এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের তিনটি দেশ কুয়েত, ইরান ও সৌদি আরব থেকে। আর দিল্লিকে দুর্ভেদ্য কুয়াশাটা দিয়েছে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান।

অনেকের কাছে এটা অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। প্রশ্ন উঠতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েত, ইরান কিংবা সৌদি আরব থেকে কিভাবে উড়ে এসে ধুলাবালি এই ভয়াবহ ধোঁয়াশায় ‘মাথা ভারী’ করে দিল দিল্লির? বিজ্ঞানীদের এর ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। তাদের মতে, কুয়েত, ইরান ও সৌদি আরব থেকে ধুলাবালি ভরা গরম বাতাস উত্তর ভারতের লক্ষ্যে রওনা হওয়ার পর ঢুকে পড়েছিল পাকিস্তানের সীমানায়। কুয়েত, ইরান, সৌদি আরবের তুলনায় এখন অনেকটাই ঠাণ্ডা পাকিস্তানে।

যে ঠাণ্ডায় বায়ুমণ্ডলের ওপরের স্তরে থাকা তরল জলকণা জমজমাট কুয়াশার জন্ম দিয়েছে।
তারা আরও বলছেন, পাকিস্তানে সেই কুয়াশা থেকে তরল জলকণা ‘ছিনিয়ে নিয়েছিল’ কুয়েতের বাতাস। তারপর উত্তর ভারতের দিকে বইতে বইতে সেই বাতাস ভরে উঠেছিল ধোঁয়ায়। যে ধোঁয়ার জন্য দায় এড়াতে পারেন না পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষকরা। বছরের এই সময়ে কৃষকরা ফসলের বর্জ্য পোড়ান নির্বিচারে। তার থেকেই জন্ম হয় ভয়ঙ্কর ধোঁয়ার। পাকিস্তানের কুয়াশা থেকে তরল জলের কণা আর পঞ্জাব, হরিয়ানার আকাশের ধোঁয়াকে সঙ্গে নিয়ে কুয়েতের বাতাস জন্ম দিয়েছে দিল্লির এই ভয়াবহ ধোঁয়াশার।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, পাকিস্তানের কুয়াশা থেকে তরল জলকণা আর পাঞ্জাব, হরিয়ানার বায়ুমণ্ডল থেকে ফসল পোড়ানো ধোঁয়া ভরে নিয়ে কুয়েতের বাতাস ভারি হয়ে পড়েছে। ফলে তার পক্ষে আর বেশি দূরে বয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কুয়েতের বাতাস তাই থমকে গেলে দিল্লির আকাশে। তা যেন দিল্লির গলায় বসেছে ফাঁস হয়ে! ফলে, ভয়াবহ ধোঁয়াশায় শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে রাজধানী দিল্লির! বিপদ এড়াতে এজন্য ইতিমধ্যে কয়েক হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।