স্বার্থপরের মতো পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা: রিজভী
দলের নেতাকর্মীদের ফেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা স্বার্থপরের মতো পালিয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেছেন, শহীদ নূর হোসেন দিবসে আওয়ামী লীগ নাকি ঢাকা শহর উথাল-পাতাল করে দেবে। ওদের মতো আমরা মোড়ে মোড়ে বন্দুক নিয়ে পাহারাও দিইনি। কিন্তু ওদের সেদিন কোথাও দেখা যায়নি। কোথায় যুবলীগ? কোথায় ছাত্রলীগ? অথচ একসময় বিএনপি বের হলেই ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হতো। এটাই ছিল শেখ হাসিনার নীতি। তার পরিণামও হয়েছে ভয়াবহ। সঙ্গীসাথী ফেলে স্বার্থপরের মত পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর বনানীতে জুলাই গণআন্দোলনে চোখ হারানো ক্ষতিগ্রস্ত এবং নিম্নবিত্ত মানুষদের চক্ষু বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে বিনামূল্যে চক্ষুসেবা ক্যাম্পের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘আমরা বিএনপি পরিবার’র প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের নির্দেশনায় এ সেবা কার্যক্রম আয়োজন করা হয়।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার এদেশে ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের আর কোনো সুযোগ নেই। তিনি ক্ষমতাকে ধরে রাখতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব জিম্মি করে দিয়েছিলেন পার্শ্ববর্তী দেশের কাছে। এখন জনগণের একটাই দাবি, শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যত চুক্তি করেছেন সেগুলো অন্তর্বর্তী সরকার প্রকাশ করুন।
তিনি বলেন, ভারতের আদানি কোম্পানির সঙ্গে বিদ্যুতের চুক্তি করেছে। যা অত্যন্ত অসম ও অন্যায় চুক্তি। আদানির কাছ থেকে কেনা এক ইউনিট বিদ্যুতের দাম ১২ টাকা, পৃথিবীর আর কোথাও এত দামে বিদ্যুৎ কেনা হয় না। শেখ হাসিনা আদানির সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন অসৎ উদ্দেশে। যদি কখনো পালাতে হয় তাহলে আদানি তাকে অর্থায়ন করবে। জনগণের কল্যাণে কোনো চুক্তি করেননি। তা না হলে আদানি কেন হুমকি দেবে?
বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, শেখ হাসিনার কোনো দেশপ্রেম ছিল না। তার ছিল ভারত প্রেম। ওই একটাই প্রেম ছিল তার। তার প্রেম কার সঙ্গে ছিল এটা জনগণ জানতো এবং বুঝতো।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আপনাদের তো সব গণতান্ত্রিক দল, ছাত্র ও সংগঠন সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু আমরা এখনো দেখতে পাই স্বাস্থ্য বিভাগে যারা দীর্ঘদিন অন্যায় করেছেন তারা এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। স্বাচিপ নামে একটি সংগঠন আছে, এখনো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ওই স্বাচিপের চিকিৎসকদের ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পদায়ন করছে। এগুলো না দেখলে অন্তর্বর্তী সরকারকেও বিপদে পড়তে হবে। ওই দানবেরা কোনো ফাঁক দিয়ে ঢুকে পড়লে তা কারও জন্য শুভ হবে না।
রিজভী আরও বলেন, মার্কেটগুলো এখনো আওয়ামী সিন্ডিকেটের হাতে। বর্তমান সরকার কি তাদের একজনকেও ধরেছেন? একজনকেও গ্রেফতার করেছেন? অথচ শুল্ক কমানোর পরও পেঁয়াজ, আলু, চিনি, আটা ও সয়াবিন তেলের দাম কমে না। কারণ, বাজার সিন্ডিকেট যাদের হাতে তাদের কাউকে সরকার গ্রেফতার করতে পারেনি। এ বিষয়গুলো না দেখলে ফ্যাসিস্টরা নানাভাবে মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে এবং মাঝেমধ্যেই ভুত-পেত্নীর মতো আওয়াজ দেবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত, মাসুদ কামাল, বিএনপির সহ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন বকুল, আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন ও সদস্যসচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুন প্রমুখ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন