‘‌স্বৈরশাসনে শেখ হাসিনার কাছে এরশাদ স্কুলছাত্র’

গেল জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নতুন এক বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছে। এক স্বৈরশাসক তথা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়া করতে ৮ শতাধিক মানুষের আত্মত্যাগের ঘটনা ইতিহাসে বিরল। তবে দেশের ইতিহাসে স্বৈরাচার বলতে শুধু হাসিনাই নয়, অনেকে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির নেতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদকেও স্বৈরাচার মনে করতেন।

হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সঙ্গে বেশ লম্বা সময়ের ওঠাবসা ছিল দেশের প্রবীণ চলচ্চিত্র নির্মাতা ও অভিনেতা সোহেল রানার। সে প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন সোহেল রানা। দেশের খ্যাতিমান এই পরিচালক জানালেন, দীর্ঘ সময় ধরে এরশাদকে একজন ভালো মানুষ মনে করেন তিনি। কিন্তু তাকে স্বৈরশাসকের সঙ্গে তুলনা করা হতো। সে প্রসঙ্গে সোহেল রানার বক্তব্য, ‘যাদের রক্তের মধ্যেই আছে আমরা অন্যায় করব। সেই ধরনের কিছু অন্যায় আছে যা এরশাদ সাহেব করেননি তা নয়। কিন্তু একজন মানুষ হিসেবে আমি দশ বছর তার সঙ্গে ছিলাম। আমি দশ বছর যা দেখেছি, তাতেই আমি বলতে পারি, তিনি সত্যিকার অর্থে একজন ভালো মানুষ।’

সোহেল রানা বলেন, ‘তাকে (এরশাদ) নয় বছরের স্বৈরশাসক হিসেবে অনেকে বলে। আমি বলি, যদি ওনাকে স্বৈরশাসক বলা হয়, তাহলে গত ১৬ বছরের ক্ষমতায় থাকা কথিত সরকারদের স্কুলে এরশাদ সাহেবকে ভর্তি করতে হবে, সেটাই শিখতে যে স্বৈরতন্ত্র কী, স্বৈরশাসন কাকে বলে, সেটা কীভাবে করা উচিৎ এবং স্বৈরশাসনের অবস্থানটা কী।’

সোহেল রানার আসল নাম মাসুদ পারভেজ। তিনি চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন সোহেল রানা নাম ধারণ করে। বাংলাদেশের প্রথম পূর্ণাঙ্গ মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’ ছবির প্রযোজক হিসেবে চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন। ছবিটির পরিচালনা করেন চাষী নজরুল ইসলাম। ১৯৭৩ সালে সোহেল রানা নাম ধারণ করে কাজী আনোয়ার হোসেনের বিখ্যাত কাল্পনিক চরিত্র মাসুদ রানার একটি গল্প অবলম্বনে ‌‘মাসুদ রানা’ ছবির নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং একই ছবির মাধ্যমে তিনি মাসুদ পারভেজ নামে পরিচালক হিসেবেও যাত্রা শুরু করেন।