সড়ক দুর্ঘটনা রোধে পটুয়াখালীর তরুণের চালকবিহীন গাড়ি!
ঢাকাসহ দেশব্যাপী যখন সড়ক দুর্ঘটনা নিত্যনৈমিত্তিক হয়ে উঠেছে, অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ঠিক তখই কুয়াকাটার এক তরুণ বিজ্ঞানী আবিষ্কার করেছেন জ্বালানি সাশ্রয়ী চালকবিহীন পরিবেশবান্ধব গাড়ি।
সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে কার্যকর এবং চালক ভুলভাবে চালাতে চাইলেও গাড়িটি সয়ংক্রিয়ভাবে নিজে থেকে দুর্ঘটনা এড়িয়ে এবং অন্যকে সতর্ক করে সড়কে চলতে পারবে বলে দাবি গাড়িটির আবিষ্কারক তরুণ বিজ্ঞানী মাহবুবুর রহমান শাওনের। গাড়িটি আট মিটার দূর থেকেই অন্য যানবাহন ও প্রাণিকে ফলো করে দুর্ঘটনা এড়াতে সক্ষম হবে।
বাংলাদেশ প্লানেটর কলেজের রোবোটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র শাওন প্রায় ১মাস ধরে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে জ্বালানি সাশ্রয়ী সোলার সিস্টেম চালকবিহীন এই গাড়িটি তৈরি করেন। গাড়িটি পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়েছে কুয়াকাটা-ঢাকা মহাসড়কে। সফলও হয়েছেন শাওন।
এ ছাড়াও আবিষ্কার করেছেন সিকিউরিটি অ্যালার্ম, মোবাইলের ব্যাটারির মাধ্যমে বিদ্যুৎসাশ্রয়ী ফ্রিজ, সেন্সর লাইট, স্মার্ট সুইস, মোবাইল সুইস, ড্রোন বিমান, মোবাইলের মাধ্যমে সুইস অন অফ করার যন্ত্র।
গত বছর শাওন সী-প্লেন তৈরি করে পরীক্ষামূলক সামান্য আকাশে উড়িয়ে নদীতে ভাসিয়েছিলেন। কিন্তু এ পর্যন্ত পরিবারের আর্থিক সহযোগিতা ও বন্ধুদের উৎসাহ ছাড়া তার পাশে কেউ দাঁড়ায়নি।
শাওনের মতে, তিনি আধুনিক যন্ত্রপাতি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা পেলে তার আবিষ্কৃত গাড়ি ও ইলেক্ট্রিক্যাল যন্ত্রপাতি বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করে আধুনিক বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিতে পারেন। তার প্রযুক্তি বাজারজাত করা গেলে দেশও লাভবান হবে। শাওনের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার মহিপুর থানার মোয়াজ্জেমপুর গ্রামে।
রোববার বেলা ১১টায় মহিপুর থানা সদরে মহিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে শাওন তার আবিষ্কৃত প্রযুক্তির আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদর্শন করেন। কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লবের সভাপতিত্বে প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কলাপাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার আলহাজ্ব আ. ছত্তার ফরাজী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মনিরুল ইসলাম, কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আনু, কলাপাড়া রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম রিপন, বেসরকারি সংস্থা পাথওয়ে’র পরিচালক মো. শাহিন মিয়া প্রমুখ।
ক্ষুদে বিজ্ঞানী মাহবুবুর রহমান শাওন সাংবাদিকদের জানান, ছোটবেলা থেকেই তার বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ ছিল। লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি খেলাধুলা হিসেবে বেছে নেন ইলেক্ট্রিক্যাল যন্ত্রপাতি। সেই খেলাধুলা থেকেই তার আবিষ্কারের প্রতি ছিল বিশেষ আগ্রহ। তবে তার বাবা-মা সব সময় তাকে নানাভাবে সহযোগিতা এবং উৎসাহ যোগিয়ে এসেছেন।
শাওন বলেন, সরকারের সহযোগিতা পেলে তিনি তার আবিষ্কার আধুনিকভাবে বাজারে সরবরাহ করে দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারবেন।
শাওনের বাবা মাদ্রাসা শিক্ষক নাসির উদ্দিন বলেন, শাওন ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ার চেয়ে নানা যন্ত্রপাতি নিয়ে ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করতো। তার খেলাধুলার অংশই ছিল আবিষ্কার। ছেলের এমন আগ্রহ দেখে তাকে বাধা না দিয়ে যখন যা চেয়েছে কিনে দিয়েছি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন