হঠাৎ হেসে উঠবেন যে কারণে!
সকাল হলেই পার্কে বা মাঠে দৌড়াতে বের হন? হঠাৎ করে কানে আসে কারা যেন উচ্চস্বরে হেসে উঠলেন। প্রথমটায় চমকে গেলেও, এখন দিব্যি মানিয়ে নিয়েছেন এই হাসির কলরবে।
তবে আপনি নিজে খুব গম্ভীর। মুখ গম্ভীর করে যতটা সম্ভব ততটা প্রাণপণ দৌড়ে, ব্রেকফাস্ট করে আবার দৌড়ে অফিস। সেখানেও আবার বোর্ড টানানো, ‘সাইলেন্স জোন’। ব্যস, হাসি তো দুরঅস্ত, কথা বলারই জো নেই। তবে বাকি সময়টা হাসুন। কারণে হাসুন, অকারণে হাসুন। কেন এতদিন রামগরুড়ের ছানার মতো আপনার হাসতে মানা ছিল, সেটা ভেবেও হাসতে পারেন। তবে হাসুন। আপনার মনে প্রশ্ন আসতেই পারে, কেন হাসবেন? কারণ তো কিছু আছে। তো দেখে নেওয়া যাক, কি কি কারণে আপনাদের হাসা একান্তভাবে দরকার।
আজকাল কটা মানুষ ভাবুন তো মন খুলে হাসেন? সবাই তো মেপে হাসেন। কারণ, মন খুলে যারা হাসে, তাঁদের নাকি আবার কোনও ব্যক্তিত্ব নেই। তাই হাসির খোরাক হতে আপনারাও চান না। ফলে লোকের সঙ্গে দেখা হলে ঠোঁটে মিথ্যা হাসি ফুটিয়ে সৌজন্য বিনিময়ই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনটা করলে কিন্তু আপনার শরীর এইসব সুফলগুলি পাবে না।
১. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
প্রাণ খুলে হাসি আমাদের হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। এরফলে যারা যে কোনও কারণেই মন খুলে হাসতে পারেন, তাদের হৃদরোগের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। এছাড়াও রক্তচাপ কমাতে হাসির জুড়ি মেলা ভার।
২. দুশ্চিন্তা কমায়
কাজের চাপ, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে চাপ, এই সবকিছু নিয়েই আমরা দুঃশ্চিন্তায় জর্জরিত। তবে দুঃশ্চিন্তাকে আপনার সঙ্গী বানিয়ে ফেলবেন না। উল্টো হাসুন। মনে রাখবেন, খারাপ সময় একদিন ঠিক আপনাকে বিদায় জানাবে। সেই কারণে নিজের আনন্দ, হাসি এগুলোকে বিসর্জন দিতে যাবেন না। এছাড়াও হাসলে এন্ডরফিন নামক হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায়, যা আমাদের মস্তিষ্ককে চিন্তামুক্ত রাখতে সাহায্য করে।
৩. মেজাজ চনমনে রাখে
এন্ডরফিন নামক হরমোনের নিঃসরণ আমাদের মুড ভাল রাখতে সাহায্য করে। তাই তো যখনই মানসিক দিক থেকে ভীষণ ক্লান্ত হয়ে পড়বেন অথবা কোনও কারণে ভীষণ মন খারাপের মধ্যে ডুবে থাকবেন, তখন চেষ্টা করুন মন খুলে হাসার। এমনটা করলে দেখবেন উপকার মিলবে।
৪. কাজ করার ক্ষমতা বাড়ে
অফিসের কম্পিউটারে ফেসবুক, ইউটিউব সব ব্লক করা? অফিসের যুক্তি, এটা নাকি আপনি একাগ্রচিত্তে কাজ করতে পারবেন। কিন্তু এই পদ্ধতি একেবারেই ভুল। কারণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কাজের ফাঁকে সময় করে মজার ভিডিও, ছবি এগুলো দেখুন। এতে আপনার একঘেয়েমি কাটবে এবং আপনি কাজের প্রতি পুনরায় মনোযোগ দিতে পারবেন।
৫. বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠতে সাহায্য করে
আপনি তখনই কারোর কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠতে পারবেন, যখন আপনি মন খুলে হাসবেন। আর তাই যখনই কারও সঙ্গে কথা বলবেন, চেষ্টা করুন হেসে কথা বলার। এতে আপনার প্রতি অন্যদের বিশ্বাসযোগ্যতা যেমন বাড়বে, তেমনই বহু ভুল বোঝাবুঝি এক নিমেষে হাওয়া হয়ে যাবে একটা মুচকি হাসিতেই।
৬. সহমর্মিতা বাড়িয়ে তোলে
আমরা যখন কারও সঙ্গে খারাপভাবে বা রাগ করে কথা বলি, তখন আমরা এটা বুঝতে পারি না যে, এর ফলে সেই মানুষটি কতটা কষ্ট পান। তবে যে কোনও বিষয়কে ঠাণ্ডা মাথায় ভেবে সেই ভাবে কথা বললে দুই তরফেই সমস্যা অনেকটাই কমে। এছাড়াও অনেক সময় আমাদের মধ্যে প্রতিশোধস্পৃহা জাগ্রত হয়। নিজের এই ধরণের ভাবনায় নিজেই হাসুন। দেখবেন, রাগ গলে পানি হয়ে যাবে। উল্টো অন্য মানুষের সমস্যা বুঝতে আপনি বেশ তৎপর হয়ে উঠবেন।
৭. যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করে
কত কারণেই না আমরা ব্যাথা পেয়ে থাকি। তা সে মানসিক হোক বা শারীরিক। আর ঠিক এই কারণেই, ব্যাথা কমাতে মন খুলে হাসুন। আর আগেই বলে হয়েছে যে হাসলে এন্ডরফিন হরমোন নিঃসরণ হয়। এর ফলে আমাদের যে কোনও ব্যাথাই কমে যায়।
৮. মনযোগী হতে সাহায্য করে
দুঃশ্চিন্তা বা একঘেয়েমি আমাদের যে কোনও কাজের ওপরেই বিরক্তির সূচনা করে। আপনিও যদি এরকম সমস্যার মধ্যে থাকেন, তাহলে মন খুলে হাসুন। আত্মীয়, বন্ধুবান্ধব সবার সঙ্গে আড্ডায় মেতে উঠুন। আর তা যদি না হয়, তাহলে অন্তত হাসির কোনও সিনেমা দেখুন। দেখবেন মন একদম ভালো হয়ে গেছে। সূত্র: বোল্ডস্কাই
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন