হাতীবান্ধায় স্বাভাবিক প্রসবের দিকে ঝুঁকছেন প্রসূতি মায়েরা
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রের সুবিধায় স্বাভাবিক প্রসবের দিকে ঝুঁকছেন প্রসূতি মায়েরা।
এ উপজেলার ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যান কেন্দ্রগুলো স্বাভাবিক প্রসবের ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্যও অর্জন করেছে।এ কার্যক্রমের কারনে উপজেলায় গত অক্টোবর মাসে ১০ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যান কেন্দ্রে ১২২টি স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে গোতামারী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যান কেন্দ্র। শুধু অক্টোবর মাসে এ প্রতিষ্ঠানে ৫৬টি স্বাভাবিক প্রসব অর্জিত হয়েছে। জুলাই মাসে এ উপজেলায় প্রাতিষ্ঠানিক স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে ১১৫টি।ওই মাসেও সবচেয়ে বেশি স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে গোতামারী স্বাস্থ্য পরিবার কল্যান কেন্দ্রে।ওই মাসে এখানে ৩৭টি প্রতিষ্ঠানটি স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে। আগষ্ঠ মাসে এ উপজেলায় স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে ১১৪টি। বড়খাতা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্র উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ৪০টি স্বাভাবিক প্রসব করেছে। সেপ্টেম্বর মাসে মোট প্রাতিষ্ঠানিক স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে ১১৭টি। বড়খাতায় হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এখানে ৪১টি স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক সময় প্রসূতি মা’সহ অভিভাবকরা ভাবতেন সিজারের মাধ্যমে প্রসব করানোই ঝুঁকিমুক্ত। কিন্তু প্রসূতি মায়ের স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও অর্থ অপচয়ে বিষয়টি বোঝা হয়ে দাঁড়ায় তাদের কাছে।
বর্তমানে সে ধারণা পাল্টে স্বাভাবিক প্রসবের দিকে ঝুঁকছেন প্রসূতি মায়েরা। এ বছরের ৩১ অক্টোবর মাসে গোতামারী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে স্বাভাবিক প্রসবের মাধ্যমে ছেলে সন্তানের জন্ম হওয়ায় খুশি এক গৃহবধূ। তিনি জানান,তাকে অনেকে সিজার করার পরামর্শ দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুই কারো কথা না শুনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে আইসং। এইখানে স্বাস্থ্য আপার পরামর্শ নেং। ওমরা মোর কথা শুনে নিয়মিত শরীর চেক করে। আপার পরামর্শে মুই নরমল ডেলিভারি করার ইচ্ছুক হং। এরমধ্যে একদিন প্রসব ব্যাথা উঠিলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে বাড়ির লোকজন মোক নিয়ে আইসে। আসার পর মোর ছওয়ার জন্ম হইল। এলা ছওয়া ও মুই সুস্থ আছুং।
গোতামারী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রে দায়িত্বরত পরিবার কল্যান পরিদর্শিকা লাইলী বেগম বলেন, গ্রামের মানুষ অনেক সচেতন হয়েছে। নিরাপদ প্রসবের জন্য তারা নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন।এরই ধারাবাহিকতায় গত অক্টোবর মাসে এখানে ৫৬টি স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে। তারা সকলে সুস্থ ও নিরাপদে আছেন।
হাতীবান্ধা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা খায়রুল ইসলাম বলেন, ওয়ার্ড পর্যায়ে কর্মরত পরিবার কল্যান সহকারী এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক উচিষ্ট জনগোষ্ঠিকে পরিবার পরিকল্পনা, মা-শিশু স্বাস্থ্য ও প্রাতিষ্ঠানিক স্বাভাবিক প্রসব সেবা গ্রহণে ব্যাপকভাবে কাউন্সেলিং করছেন, যা অত্যন্ত প্রসংশনীয়। এ উপজেলার ইউনিয়নগুলোতে জনগনের দোরগোড়ায় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সমন্বিত সেবা কার্যক্রম ৪৮টি স্যাটেলাইট ক্লিনিকের মাধ্যমে নিয়মিত সম্পাদিত হচ্ছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন