হাসিনা ফিরলে দাঁড়াতে হবে কাঠগড়ায়, জায়গা হবে জেলে: উপদেষ্টা ফরিদা

শেখ হাসিনা দেশে ফিরলে তাকে গণহত্যার আসামি হয়ে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে এবং তার জায়গা জেলে হবে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা যদি আদৌ বাংলাদেশে আসে বা এমন চিন্তাও করেন তাহলে তাকে আসতে হবে একমাত্র গণহত্যার আসামি হয়ে। তার বিচারের জন্য। সে এদিক দিয়ে-ওদিক দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকবে বলে আমাদের যে ভয় দেখান, তাকে এসে আগে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। এছাড়া হাসিনার বাংলাদেশে আসার আর কোনো সুযোগ নেই। তার বিচার আমরা করবোই।

রোববার (৮ ডিসেম্বর) পিলখানায় বিজিবি সদরদপ্তরের সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের পুনর্বাসনে সহায়তা কার্যক্রম অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফরিদা আখতার বলেন, শেখ হাসিনার মতো একজন ফ্যাসিস্টকে দেশ থেকে বিতাড়িত করতে কোনো রাজনৈতিক দল কোনো আন্দোলন করতে পারেনি, পেরেছে ছাত্র-জনতা। সেই আন্দোলনে ছাত্রদের পাশাপাশি যারা হতাহত হয়েছে তাদের কেউ রিকশা চালাতো, কেউ গ্যারেজে কাজ করতো। কেউ বেকার ছিল না। তাদের জীবন ছিল। দেশের কারণে অন্যায় সহ্য করতে না পেরে তারা রাস্তায় নেমেছিল।

তিনি বলেন, আমরা যারা সুস্থ আছি, যারা রাস্তায় ছিলাম, অনেকে ভালো আছি। হাসনাত-সারজিসরা সুস্থ আছে। কিন্তু আমাদের দায়িত্ব ও দায়বদ্ধতা এখন অনেক বেশি। আমাদের দায়িত্ব শুধু কয়েকটা মন্ত্রণালয় পরিচালনা করা নয়, দেশের প্রতি মানুষের প্রতি এখন যে কোনো নির্বাচিত সরকারের চেয়েও বেশি দায়িত্ব আমাদের।

ফরিদা আখতার আরও বলেন, আমরা রক্তের ওপর অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিয়েছি। এ কারণে আমাদের দায়িত্বও অনেক বেশি। আমরা যদি জুলাই বিপ্লবে জড়িতদের জন্য কিছু করতে না পারি তাহলে আমাদের যে শাস্তি দেবেন তা মাথা পেতে নেবো।

বর্তমান সরকার পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার করবে উল্লেখ করে এ উপদেষ্টা বলেন, যারা এখন বিজিবিতে আছেন তাদের দায়িত্ব অনেক বেশি। তাদের উদ্দেশে বলছি, আপনারা অবশ্যই পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার চাইবেন। পিলখানা হত্যার বিচার আমরা চাইবোই, এ বিচার হতেই হবে। এই সরকার পিলখানা হত্যার বিচার অবশ্যই করবে।

বিজিবির উদ্দেশে তিনি অনুরোধ করে বলেন, আমার মন্ত্রণালয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ। ইলিশ নিয়ে আমরা অনেক বিপদে থাকি। ভারত আমাদের ইলিশ ছাড়া খাবে না, অথচ তাদের গঙ্গায় ইলিশ হয়, সেই গঙ্গার ইলিশে আবার স্বাদ নেই। পদ্মার ইলিশ তাদের লাগবেই। কাজেই এখান থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে আমাদের ইলিশ ভারতে যায়। বিজিবি অনেকটা বন্ধ করেছে। আগামী দিনেও যেন ইলিশ চোরাচালান না হয় সেজন্য নজরদারি বাড়ানোর অনুরোধ জানান তিনি।

বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও চিন্তক ফরহাদ মজাহার, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, মেজর আহমেদ ফেরদৌস (অব.), উইমেন সাপোর্ট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা তৌহিদা হক। এছাড়াও বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আহত ছাত্র-জনতা ও তাদের অভিভাবরা উপস্থিত ছিলেন।