৩০ হাজার কোটি টাকা ছাড়াল পদ্মা সেতু প্রকল্পের ব্যয়
পদ্মা সেতু প্রকল্পের ব্যয় তৃতীয় দফায় বাড়ল এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা। ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ এ অর্থ ব্যয় হবে। ফলে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর ব্যয় বেড়ে দাঁড়াল ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকায়।
বৃহস্পতিবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল ব্যয় ধরা হয় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। প্রকল্পের মূল ডিপিপির (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) থেকে ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ অতিরিক্ত এ ব্যয় বাড়ছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ব্যয় এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেলেও সবমিলিয়ে প্রকল্প ব্যয় বাড়বে চার দশমিক ৮৬ ভাগ। মূল প্রকল্পের পাঁচ ভাগের কম ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় পুরো প্রকল্পটি সংশোধনের প্রয়োজন হয়নি।
সেতু বিভাগের আওতায় পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি একনেকে অনুমোদন হয়। দ্বিতীয় সংশোধনীতে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাস্তবায়নের টার্গেট ধরা হয়। প্রকল্পটি বর্তমানে পাঁচ ভাগে বাস্তবায়ন হচ্ছে। এর মধ্যে জাজিরা ও মাওয়া সংযোগ সড়ক এবং সার্ভিস এরিয়া-২ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
মূল সেতু নির্মাণ এবং নদী শাসন কাজ চলমান রয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মূল সেতুর প্রথম স্প্যান স্থাপন করা হয়। বর্তমানে আরও দুটি স্প্যান বসানো হয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পে ১৫৩০ দশমিক ৫৪ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণের জন্য এক হাজার ২৯৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা সংস্থান রয়েছে। বর্তমানে সেতু বিভাগ ১৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে আরও ১১৬৬ দশমিক ৬৭ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ করতে পারবে। সর্বশেষ অনুমোদিত ডিপিপি অনুযায়ী ১৫৩০ দশমিক ৫৪ হেক্টর জমির মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৪৭২ দশমিক ৬০ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ বাবদ এক হাজার ২৯৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা এবং ৪০ দশমিক ৮১ হেক্টর জমি হুকুম দখল বাবদ ৮৯ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।
মোট ১৪ প্রকল্প অনুমোদন
পদ্মা সেতু প্রকল্প ছাড়াও আরও ১৪টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট খরচ ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৩৭২ কোটি টাকা।
পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, হাওর এলাকায় আগামীতে যেসব রাস্তা তৈরি হবে সেগুলো এলিভেটেড করতে হবে বলে প্রধানমন্ত্রী একনেকে নির্দেশনা দিয়েছেন। যাতে নীচ দিয়ে নৌকা বা সাম্পান চলতে পারে। উপর দিয়ে রাস্তা থাকবে। তাহলে আলাদা করে ব্রিজ করতে হবে না। এক খরচেই সব কাজ হবে।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন প্রকল্প, কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্প, দেশব্যাপী ডিজিটাল টেরিস্ট্রিয়াল সম্প্রচার প্রবর্তন প্রকল্প, ২১ জেলার সুবিধাবঞ্চিত নারী ও শিশুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য, প্রজনন স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সেবা প্রদান প্রকল্প, ব্লু গোল্ড প্রোগ্রাম ফর ইন্ট্রিগ্রেটেড সাসটেইনেবল ইকনোমিক ডেভলপমেন্ট ইমপ্রোভিং দ্য ওয়াটার অ্যান্ড প্রোডাকটিভ সেক্টরস ইন সিলেকটেড পোল্ডারস ফিন্যানসিয়াল প্রকল্প, এস্টাবলিশমেন্ট অব ডিজিটাল ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম থ্রো ডিজিটাল সার্ভে অ্যান্ড সেটেলমেন্ট অপারেশনস অব থ্রি সিটি করপোরেশনস ওয়ান পৌরসভা অ্যান্ড রুরাল উপজেলা অব বাংলাদেশ প্রকল্প, লোকাল গভর্নমেন্ট ইনিশিয়েটিভ অন ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রকল্প, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ট্রান্সমিশন গ্রিড সম্প্রসারণ প্রকল্প, ডিপিডিসির আওতায় কারওয়ান বাজারে ভূ-গর্ভস্থ উপকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, লং টার্ম সার্ভিস অ্যাগ্রিমেন্ট ফর ভেড়ামারা কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্ট প্রকল্প, লাকসাম এবং চিনকী আস্তানার মধ্যে ডাবল লাইন ট্র্যাক নির্মাণ প্রকল্প, সিগন্যালিংসহ টঙ্গী ভৈরববাজার সেকশনে ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্প, ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়ক নির্মাণ প্রকল্প, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের জন্য লজিস্টিকস ও ফ্লিট মেইনটেন্যান্স ফ্যাসিলিটিস প্রকল্প।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন