মেয়াদ উত্তীর্ণ সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল
৫ বছরেও শেষ হয়নি কুড়িগ্রামের সোনাহাট সেতুর নির্মাণ কাজ
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2023/09/IMG_20230903_141517-900x450.jpg)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে ৫ বছরেও শেষ হয়নি সোনাহাট স্থলবন্দর সড়কের দুধকুমার নদের ওপর পিসি গার্ডার সেতুর নির্মাণ কাজ। ফলে বৃটিশ আমলে নির্মিত মেয়াদ উত্তীর্ণ ঝুকিপূর্ণ স্টিলের রেলসেতু দিয়ে পারাপারে বাধ্য হচ্ছে সোনাহাট স্থলবন্দরের পাথর ও কয়লা বোঝাই ট্রাকসহ সকল যানবাহন। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সোনাহাট স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা।
সোনাহাট সেতু নির্মাণের সময় ধরা হয়েছিল দেড় বছর। সে অনুযায়ী ২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি সেতু নির্মাণ শেষ হওযার কথা ছিল। দু’বছর ৬মাস আগেই সেতু নির্মাণের নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেছে। ভূরুঙ্গামারীর সোনাহাট স্থলবন্দর সড়কের দুধকুমার নদের ওপর নির্মিত সোনাহাট সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। ৫ বছরে সেতুর কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৩০ শতাংশ।
সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় বৃটিশ আমলে নির্মিত মেয়াদোত্তীর্ণ নড়বড়ে রেলসেতু দিয়ে পাথর ও কয়লা বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে মেয়াদোত্তীর্ণ রেলসেতুটি হুমকির মুখে পড়েছে। যে কোন সময় নড়বড়ে রেলসেতুটি ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। স্থানীয়দের দাবি দ্রুত সোনাহাট সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করা হোক।
সড়ক ও জনপথ দপ্তর সূত্রে জানাযায়, ২০১৮ সালে একনেকে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর সোনাহাট স্থলবন্দর সড়কের দুধকুমার নদের ওপর বৃটিশ আমলে নির্মিত মেয়াদোত্তীর্ণ রেলসেতুর দক্ষিণে মোট ২৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৪৫ মিটার লম্বা পিসি গার্ডার সোনাহাট সেতু নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিঃ ২০১৯ সালের ২২ জুলাই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে। অদ্যবধি সেতু নির্মাণ শেষ হয়নি। সেতু নির্মাণের নির্ধারিত সময় ধরা হয়েছিল ১৮ মাস। সে অনুযায়ী সেতু নির্মাণ কাজ গত ২০২১ সালের ২১ জানুয়ারি শেষ হওয়ার কথা ছিল।
স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি আর নানা অজুহাতের কারণে পাঁচ বছরেও সোনাহাট সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। সেতুর ১৩টি পিলারের মধ্যে মাত্র ৫টি পিলারের কাজ শেষ হয়েছে।
এছাড়া সেতুর ৬৪৫ মিটার ডেক্স স্লাবের (সেতুর যে অংশের ওপর দিয়ে চলাচল করা হয়) জন্য ১৪টি স্প্যান তৈরি করতে হবে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কেবলমাত্র ১টি স্প্যান তৈরি করতে পেরেছে। সেতুর জন্য ৪৯ দশমিক ৫০ মিটার লম্বা ১০টি স্প্যান এবং ৩৭ দশমিক ২৯ মিটার লম্বা ৪টি স্প্যান নির্মাণ করতে হবে। সব মিলিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি পাঁচ বছরে সেতুর মাত্র ৩০ শতাংশের মতো কাজ শেষ করেছে।
কয়েকজন পথচারী বলেন, নড়বড়ে রেলসেতু দিয়ে পাথর বোঝাই ট্রাক যাওয়ার সময় সেতুটি থরথর করে কাঁপতে থাকে। এছাড়া সরু সেতু দিয়ে যখন একটি ট্রাক যায় তখন পাশদিয়ে অন্য যানবাহন যাওয়ার জায়গা থাকে না। এতে সেতুর দুই প্রান্তে প্রতিনিয়ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
সোনাহাট স্থলবন্দরের আমদানী ও রপ্তানীকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পুরোনো সেতুটি যে কোন সময় ভেঙে বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেতুটি ভেঙে গেলে স্থলবন্দরের আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প ব্যবস্থাপক শামিম রেজা বলেন, সেতুর ডিজাইন সংশোধনের কারণে প্রায় দুই বছর কাজ বন্ধ ছিল। এছাড়া নদীতে ছয় মাসের অধিক সময় পানি থাকায় কাজ করা যায়না। বৃষ্টির কারণেও কাজের সমস্যা হয়।
সেতু নির্মাণের ধীরগতির কথা স্বীকার করে কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, চলতি মাসে সেতুর বিষয়ে ভূমি, সড়ক ও জনপথ এবং রেলপথ মন্ত্রনালয়ের সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া সড়ক বিভাগের সচিব মহোদয় সরেজমিনে সোনাহাট সেতুর নির্মাণ কাজ তদন্ত করে গেছেন। আশা করা যায় দ্রুত সেতুর কাজ শেষ হবে।
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন