৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংকের

২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি সাত শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের এ পূর্বাভাস গত অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির চেয়ে সামান্য বেশি।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসে বাংলাদেশের উন্নয়ন বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়েছে চলতি অর্থবছর (২০১৮-২০১৯) দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৭ শতাংশ।

বিশ্ব ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ ও বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফ্যান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

চলতি অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক-এডিবি। আর বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য বলছে, বিদায়ী (২০১৭-১৮) অর্থবছরে দেশে জিডিপির রেকর্ড প্রবৃদ্ধি ৭.৮৬ শতাংশ হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফ্যান বলেন, জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭.১, ৭.২, ৭.৬ এগুলো নিয়ে বিতর্ক নয় এগুলো ইউজলেস। আমাদের দেখতে হবে জিডিপির এই গ্রুফটা কোথায় ইমপ্যাক্ট করে। বেকারত্ব দূর হচ্ছে কি না, দারিদ্র দূর হচ্ছে কি না। টেকসই উন্নতি হচ্ছে কি না। জিডিপির প্রবৃদ্ধি বিনিয়োগে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে কি না।

তিনি বলেন, দেশের খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। এটা কমিয়ে আনতে হবে। খেলাপি ঋণ বাড়লে টেকসই উন্নয়ন হবে না।

বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফ্যান বলেন, বাংলাদেশ দ্রুত উন্নয়ন করছে। উন্নয়ন ধরে রাখতে সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। রপ্তানি ও রেমিটেন্সে প্রবৃদ্ধি যেন কমে না যায় সেদিকে নজর রাখতে হবে।

এক প্রশ্নের জাবাবে চিমিয়াও ফ্যান বলেন, নির্বাচনে ব্যবসার পরিবেশ যেন খারাপ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অনিশ্চিত পরিবেশে কেউ ব্যবসায় আসবে না। বিনিয়োগ পরিবেশ যেন থাকে সেটা নিশ্চয়তা থাকতে হবে।

খেলাপি ঋণের বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের রিপোর্টে বলা হয়েছে, এ ঋণ পুনঃতফসিলের কারণে ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতি বেড়ে যাবে। এতে চাপ বাড়বে বাজেটে। এজন্য আর্থিক খাতে সংস্কার আনতে হবে। খেলাপি ঋণের দিকে নজর দিতে হবে। এই মুহুর্তে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৪ শতাংশে।

বিশ্ব ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমাদের অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেখতে হবে এটা বিতরণ ব্যবস্থা কেমন, এটার উন্নতি করতে হবে।

বিশ্ব ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ বলেন, সরকারের বিভিন্ন মেগা প্রজেক্টে এর টাকা যেন সঠিকভাবে ব্যবহার হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আর প্রকল্পগুলো ভেবে নিতে হবে, ভবিষ্যতে এসব প্রকল্প থেকে কী ধরনের অর্থনৈতিক সুফল আসবে সেটা বের করাতে হবে।

জাহিদ বলেন, টেকসই ‍উন্নয়নের জন্য মানবসম্পদের উন্নতি করতে হবে। আইটি বিষয়ে দক্ষতা বাড়াতে হবে। ব্যাংকের সুদের হার যেন বাজারভিত্তিক হয়। রাজস্ব আয়ের টাকা কোয়ালিটিভাবে খরচ করতে হবে। রপ্তানি বহুমুখী করতে হবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে দক্ষতা বাড়াতে হবে।

পিআরআই নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংকের নয়-ছয় এই খেলা বাদ দিতে হবে। মুখে বলবেন সিঙ্গেল ডিজিটে লোন দিবেন কিন্তু প্রাকটিকালি সেটা হবে না সেটা উচিৎ নয়।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেইন জিল্লুর রহমানও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।