আইএসের পতাকা নিয়ে মিসরের মসজিদে হামলা
মিসরের সিনাই প্রদেশের আল-রাওদাহ মসজিদে জুমার নামাজের সময় হামলাকারীরা জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) পতাকা বহন করছিল বলে জানিয়েছেন ঘটনার তদন্তকারী এক কর্মকর্তা।
স্থানীয় সময় শুক্রবার চালানো ওই হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০৫ জনে। এ ছাড়া আহত হয়েছে কমপক্ষে ১০০ জন।
মিসরের একজন পাবলিক প্রসিকিউটরের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, ঘটনাস্থলে ৩০ জনের মতো হামলাকারী উপস্থিত ছিল।
এদিকে হামলাকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসি বলেন, ‘এ হামলা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই রুখে দেওয়ার একটি চেষ্টা। সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ আমাদের শহীদদের রক্তের বদলা নেবে এবং নিরাপত্তা ও ভারসাম্য ফিরিয়ে আনবে।’
বিবিসির খবরে বলা হয়, সিসির এ হুঁশিয়ারির পর সন্ত্রাসীদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে মিসরের সেনাবাহিনী।
গত শুক্রবার সিনাই প্রদেশের বির আল-আবেদ এলাকার আল রাওদাহ মসজিদে জুমার নামাজ পড়ছিলেন মুসল্লিরা। হঠাৎই বিস্ফোরণ ঘটানো হয় আগে থেকে মসজিদের ভেতরে রাখা বোমায়। বোমার আঘাতে নিহত হন বেশ কয়েকজন। বাকি মুসল্লিরা আতঙ্কে মসজিদের বিভিন্ন পথ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন।
তবে বিস্ফোরণের পর পরই কয়েকটি গাড়ি নিয়ে মসজিদটি ঘিরে ফেলে সন্ত্রাসীরা। মসজিদের প্রবেশমুখগুলোর কাছাকাছি গাড়ি নিয়ে নির্বিচারে গুলি চালানো হয় আতঙ্কিত মুসল্লিদের ওপর। এমনকি হতাহতদের উদ্ধারে আসা অ্যাম্বুলেন্সের ওপর গুলি চালানো হয় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সুফি মতাদর্শের মুসলিমরা প্রায়ই ওই মসজিদে জমায়েত হতেন। ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও অন্যান্য জঙ্গি সংগঠন সুফি মতাদর্শের অনুসারীদের ইসলামের শত্রু বলে বিবেচনা করে থাকে।
এদিকে এখনো হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন।
বিবিসি জানায়, ২০১৩ সালে মিসরের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরই জঙ্গিবাদের উত্থান হয় দেশটিতে। সে সময় থেকে বিভিন্ন হামলায় নিহত হয়েছে শত শত সাধারণ মানুষ, সেনা সদস্য ও পুলিশ।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৩ সাল থেকে চালানো এসব হামলার বেশির ভাগেরই পেছনে হাত রয়েছে ‘সিনাই প্রভিন্স’ নামে একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের। সন্ত্রাসী সংগঠন আইএসের সঙ্গে তাদের সরাসরি সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। সিনাই প্রদেশে আইএসের শাসন কায়েম করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।
সিনাই প্রভিন্স নামে সন্ত্রাসী সংগঠনটি মূলত উত্তর সিনাইয়ে সক্রিয় রয়েছে। এর আগে দেশের বিভিন্ন স্থানে খ্রিস্টান উপাসনালয়গুলোতে হামলা চালানোর দায় স্বীকার করেছে তারা। এ ছাড়া ২০১৫ সালে সিনাইয়ে একটি পর্যটকবাহী রাশিয়ান বিমানেও হামলা চালায় সংগঠনটি। ওই হামলায় নিহত হন ২২৪ জন। এর আগে ২০১৪ সালে এক হামলায় ৩৩ জন নিরাপত্তারক্ষীকে হত্যা করে তারা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন