একের পর এক রুশ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হচ্ছে : বিবিসি
গত সেপ্টেম্বরের পর থেকে অন্তত ছয়টি রুশ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রতিটির ক্ষেত্রেই রাশিয়া জানিয়েছে, আভ্যন্তরীণ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই এসব দুর্ঘটনা ঘটেছে। যুদ্ধবিমানে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনা বিরল কিছু নয়। বিশ্বের প্রতিটি দেশের বিমান বাহিনীতেই এটি ঘটছে। তবে এমন সময় রাশিয়া হারিয়েছে যখন ইউক্রেনে যুদ্ধ চলছে। ফলে বিষয়টি নিয়ে আরও গভীরে দেখার চেষ্টা করেছে ইসরাইলি গণমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট।
এক রিপোর্টে গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, গত সেপ্টেম্বরের পর বিধ্বস্ত হওয়া ৬ রুশ বিমানের ৪টিই ইউক্রেনের সামরিক অভিযানে ব্যবহৃত হয়েছে। এগুলো মিগ-৩১ এবং সু-২৫ মডেলের যুদ্ধবিমান। এগুলো বেশ পুরোনো মডেলের যুদ্ধবিমান। ফলে যান্ত্রিক ত্রুটিতে এই বিমানগুলির বিধ্বস্ত হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তবে এর বাইরেও একটি আধুনিক সু-৩৪ ফাইটার বোম্বার ইয়েস্ক শহরে আছড়ে পড়ে।
এতে ১৫ জন নিহত হয়। এটি কোনো পুরানো বিমান ছিল না। ২০১৪ সালেই রাশিয়ার বিমান বাহিনীতে যুক্ত হয় ওই বিমানটি। এছাড়া অন্য যেসব বিমান ধ্বংস হয়েছে, সেগুলো এমনকি ইউক্রেনেও যুদ্ধ করতে যায়নি। এরমধ্যে একটি সু-৩০ বিমান সাইবেরিয়ার ইরকুতস্ক শহরের আবাসিক এলাকায় আছড়ে পড়ে।কিন্তু কেনো এমনটা হচ্ছে? অনেকেই এ জন্য ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের কথা বলছে। কিন্তু যেই বিমানগুলো ফ্রন্টলাইন থেকে বহুদূরে বিধ্বস্ত হচ্ছে তাদের ক্ষেত্রে এই যুক্তি খাটে না।
ইয়েস্কে বিধ্বস্ত হওয়া সু-৩৪ এর ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, জ্বালানির ট্যাংকার ছিদ্র হয়ে এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। তবে অনেকেই বলছেন, বিমানে থাকা বিস্ফোরকে আগুন ধরেই বিধ্বস্ত হয় বিমানটি। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ বিমানের ইঞ্জিনে সমস্যার দিকেও আঙুল তুলেছেন।
কাউন্সিল অব ফরেন রিলেশনের এমন এক বিশেষজ্ঞ আন্দ্রেস গ্যানন বিবিসিকে বলেন, ওই দুর্ঘটনার যে ভিডিও আমরা পেয়েছি তাতে দুটো আলোর ফ্ল্যাশ দেখা গেছে। প্রথমটি জ্বালানিতে আগুন ধরার এবং দ্বিতীয়টি পাইলটের ইজেক্টের। আরএএনডি কর্পোরেশনের প্রকৌশলী মাইকেল বনার্ট বলেন, খুব সম্ভবত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে যুদ্ধবিমানের পার্টসের সংকটে পড়েছে রাশিয়া।
ফলে তারা তাদের যুদ্ধবিমানের রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারছে না। এর আগেও এমন দাবি শোনা গিয়েছিল ইউক্রেনীয় ও তার পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে। নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া ট্যাংক, মিসাইল ও অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্র তৈরিতে হিমশিম খাচ্ছে বলে দাবি তাদের।
জেরুজালেম পোস্ট জানিয়েছে, রাশিয়ার বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা ইউক্রেন যুদ্ধের আগেও খুব বিরল কিছু ছিল না।
২০১৫ সালেও রাশিয়ার বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছিল। খুব সম্ভবত অত্যাধিক ব্যবহারের কারণে সেগুলো আছড়ে পড়ে। এবার ইউক্রেন যুদ্ধের সময়ও সেই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ আবার রুশ পাইলটদের দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন