সাতক্ষীরার কলারোয়ায় বিয়ের তিন বছরে লাশ হলো গৃহবধূ, স্বামী আটক

প্রেমের সম্পর্ক, অতঃপর বিয়ে। সেই বিয়ের তিন বছরের মাথায় লাশ হতে হলো প্রেমিকা তথা গৃহবধূ যুবতীকে।

এমনই ঘটনা ঘটেছে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়া ইউনিয়নের বড়ালী গ্রামের মাঠ পাড়ায়।

সোমবার শাপলা (২২) খাতুন নামে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে কলারোয়া থানা পুলিশ।

মৃতের শশুরবাড়ির পক্ষ থেকে দাবি করেছে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে শাপলা।
তবে শাপলার পিতার পরিবারের স্বজনরা দাবি করছেন হত্যা করা হয়েছে তাকে।

শাপলা খাতুন বড়ালী গ্রামের আজগর আলী মিস্ত্রীর ছেলে শাহিন (২৫) এর স্ত্রী এবং যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়ন শিয়ালঘোনা গ্রামের মৃত আব্দুর রর সিদ্দিকের মেয়ে।

প্রায় ৩ বছর আগে শাপলার সাথে প্রেমের সম্পর্কে শাহিনের সাথে বিয়ে হয়।

শাপলার শাশুড়ি বলেন, ‘সোমবার সকালে ফজরের নামাজ পড়তে গিয়ে শাপলাকে একটি বাঁশের আড়ায় ওড়নার সাথে মেঝেতে ঝুলে থাকতে দেখেন। তাকে ডাকা ডাকি করেও কোনো সাড়া শব্দ পায়নি। তখন তার কান্নার শব্দে গ্রামের মানুষ ছুটে আসে।’

কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, ‘কেউ শাপলাকে ঝুলে থাকতে দেখেনি। তবে তার চোখের উপরে এবং ঠোঁটে রক্ত দেখা গিয়েছিল, মুখ ফৌলা ছিলো।’

পারিবারিক কোন ঝামেলা ছিলো কিনা প্রতিবেশীরা এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান।

মৃতের বোন ও বোনের মেয়েরা এটা হত্যা হয়েছে বলে দাবি করেন।
মৃতের বোনের এক মেয়ে বলেন, ‘প্রায় সময় তাদের শাপলার সাথে জামাই শাহিনের গন্ডগোল লেগে থাকতো। সে আমাদের বাড়িতে দাওয়াতে গিয়েও মারধর করতো আমার খালাকে। গতকাল রাতে এমনি কিছু ঘটে থাকতে পারে, যার কারণে তাকে এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে’ দাবি করে এর সুষ্ঠু বিচারের প্রশাসনের কাছে হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

সোনাবাড়ীয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বেনজির হোসেন হেলাল জানান, ‘বিষয়টি হত্যা নাকি আত্মহত্যা সেটা পুলিশ তদন্ত সাপেক্ষে বলতে পারবেন। তবে শাহিন ও তার স্ত্রী শাপলা দু’জনে ভালো মানুষ বলে আমরা জানি।’

কলারোয়া থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসির উদ্দিন মৃধা বলেন, ‘লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এটা হত্যাকাণ্ড কি আত্মহত্যা সেটা ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘মৃতের স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয় হয়েছে।’

এদিকে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘মৃতের স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। যদি এটি হত্যাকাণ্ড হয়ে থাকে তবে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’