ঐতিহ্যের সাক্ষী শেরপুরের মাইসাহেবা মসজিদ
ভারতের মেঘালয় ঘেঁষা গারো পাহারের পাদদেশে অবস্থিত শেরপুর জেলা। জেলায় রয়েছে নানান নিদর্শন। এর মধ্যে ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আড়াইশো বছরের পুরনো মাইসাহেবা মসজিদ।
শেরপুর জেলা-শহরের প্রাণকেন্দ্রে শেরপুর সরকারি কলেজ। এর দক্ষিণ পাশে একটি নান্দনিক স্থাপনা; নাম মাই সাহেবা জামে মসজিদ। ঐতিহাসিক মসজিদটির নামকরণ নিয়ে স্থানীয়ভাবে একটা গল্প প্রচলিত। বলা হয়, একদিন শেরপুরের তিনআনি জমিদার মুক্তাগাছার জমিদারকে দাওয়াত করেন।
দাওয়াতের উত্তরে মুক্তাগাছার জমিদার শেরপুরে একটি জায়গা চান, যেখানে তিনি বিশ্রাম করবেন। আর সে সময় এ স্থানে তিনআনা জমিদারের খাজনা আদায়ের ঘরের পাশে একটা আলাদা ঘর ছিল, জমিদার ঘরের জায়গাটা মুক্তাগাছার জমিদারকে দেবেন বলে মনস্থির করেন এবং এ জন্য হাতি দিয়ে ঘরটি ভেঙে দেওয়ার আদেশ দেন।
কিন্তু হাতি যখনই ঘরটির কাছে আসে তখনই হাতিটি মাথা নুইয়ে বসে পড়ে। খবর পেয়ে তিনআনি জমিদার এসে দেখেন ঘরের ভেতর একজন নারী আল্লাহর ইবাদতে মশগুল।
জমিদার ব্যাপারটিকে অলৌকিক মনে করেন এবং ক্ষমা চেয়ে ঘর ভাঙা থেকে বিরত থাকেন। এই ধর্মপ্রাণ নারীর নাম ছিল মাই সাহেবা। তার মৃত্যুর পর জমিদার এখানে এ মসজিদটি নির্মাণ করেন এবং এর নাম দেন মাই সাহেবা জামে মসজিদ। বর্তমানে মসজিদের ব্যাপক সংস্কার ও আধুনিকায়নের কাজ করা হলেও তাতে ঐতিহ্যের ছাপ রক্ষা করা হয়েছে।
আনুমানিক ২৫০ বছর পূর্বে নির্মিত এই মসজিদটি শেরপুর জেলার অন্যতম প্রাচীন নিদর্শন।মসজিদটি ৩ তলা। নীচতলায় রয়েছে নামাজের ব্যবস্থা ও ওযুর ব্যবস্থা। দোতলা নামাজের ব্যবস্থা এবং ধর্মীয় পাঠাগার রয়েছে। বর্তমানে মূল মসজিদে ৬ সহস্রাদিক মুসল্লী একত্রে নামায আদায় করতে পারেন।
মসজিদের প্রবেশ পথে দুইটি বড় গেইট এবং মসজিদের দুটি সুউচ্চ মিনার রয়েছে। বর্তমানে দশ হাজার মুসল্লির ধারণ ক্ষমতা, মহিলাদের নামাজের স্থান ও সমগ্র মসজিদ শীততাপ নিয়ন্ত্রিত করার কাজ চলছে। নিরাপত্তা জন্য রয়েছে সিসি ক্যামেরা।
রমজানের সময় প্রতিদিন প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ মুসল্লীরা ইফতার করে থাকেন এ মসজিদে। ইফতারির খরচ মসজিদ কমিটির লোকজন নিজেদের অর্থায়নে করে থাকেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন