ওয়াক্কাস বহিষ্কার, ভাঙনের মুখে বিএনপির জোটসঙ্গী জমিয়ত
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে সাবেক প্রতিমন্ত্রী এবং সংসদ সদস্য মুফতি মোহাম্মদ ওয়াক্কাসকে। বৃহস্পতিবার মুফতি ওয়াক্কাস পাল্টা দলের জাতীয় কনভেশনের ডাক দিয়েছেন। এতে ভাঙনের মুখে পড়েছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক এই দলটি।
সংগঠনবিরোধী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে বুধবার মুফতি ওয়াক্কাসকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, দলটির সভাপতি আল্লামা আব্দুল মোমিন, মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, সহসভাপতি মাওলানা জহিরুল হক ভূইয়া, জোনায়েদ আল হাবীব, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল্লাহ ফারুক বলেন, ‘সংগঠনবিরোধী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে মো. ওয়াক্কাসের সহসভাপতি পদ স্থগিত করে গত ১৫-০২-১৭ তারিখে শোকজ করা হয়। যার জবাব ১৪-১২-১৮ তারিখের মধ্যে দিতে বলা হয়। কিন্তু তিনি সেই শোকজ নোটিশের জবাব দেননি। সংগঠনের বৃহত্তর স্বার্থে তাকে সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ড বিশেষ করে জমিয়ত সুরক্ষা কমিটির নামে চালানো অবৈধ তৎপরতা এবং আগামী ১১ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবে ডাকা অবৈধ কনভেনশন স্থগিত করারও আহ্বান জানানো হয় এবং তাকে সহসভাপতির পদ পুনরায় ফিরিয়ে দেয়ার অঙ্গীকার করা হয়। কিন্তু তাতেও কোনো সাড়া দেননি তিনি। তাই তার সকল গঠনতন্ত্র পরিপন্থী ও সংগঠনবিরোধী তৎপরতার কারণে এবং দলের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে প্রাথমিক সদস্য পদ বিলুপ্তিসহ তাকে (ওয়াক্কাস) দল থেকে বহিষ্কার করা হলো।’
ওবায়দুল্লাহ ফারুক জানান, প্রেসক্লাবে কনভেনশনের আহ্বায়ক ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহসভাপতি মাওলানা মনসুর হাসান রায়পুরী এবং যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা শেখ মুজিবুর রহমানেরদের মজলিসে আমেলার পদ স্থগিত করা হয়েছে এবং তাদের দল থেকে কেন বহিষ্কার করা হবে না মর্মে আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে সভাপতি বরাবর জবাব দেয়ার জন্য অবগত করা হয়েছে। তাদের জবাব সন্তোষজনক না হলে সভাপতি তাদের দল থেকে বহিষ্কার করতে পারবেন।
বেশ পুরোনো দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলামে অস্থিরতা চলছে অনেক দিন ধরে। দলের নির্বাহী সভাপতি মুফতি ওয়াক্কাস আর মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমীর মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে এই টানাপোড়েন। দলটির সভাপতি বয়োবৃদ্ধ আলেম আল্লামা আবদুল মোমিন। সম্প্রতি দলের গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে নির্বাহী সভাপতির পদ বিলুপ্ত করে মুফতি ওয়াক্কাসকে সহসভাপতি করা হয়। এটা নিয়ে দ্বন্দ্ব চূড়ান্ত রূপ লাভ করে। দলের নেতাকর্মীরাও দুই ভাগে ভাগ হয়ে যান। এক সময় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী এই দলটির ভাঙন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
এদিকে আরেক বিবৃতিতে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামে মুফতি ওয়াক্কাস গ্রুপের নেতারা বলেছেন, ‘গত বছরের ১২ ডিসেম্বর জমিয়তের কেন্দ্রীয় আমেলা ও শুরার যৌথ সভায় সংবিধান ও সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপের দায়ে জমিয়তের মহাসচিব মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, সহসভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুককে সংগঠনের সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। অব্যাহতিপ্রাপ্ত মহাসচিব বা কোনো দায়িত্বশীলের কোনো প্রকার মিটিং আহ্বান করা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক। সুতরাং কাউন্সিলে নির্বাচিত নির্বাহী সভাপতি সাবেক মন্ত্রী মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাসের বিরুদ্ধে তথাকথিত আমেলার মিটিংয়ে যে বহিষ্কারাদেশ জারি করা হয়েছে তা অবৈধ ও নির্লজ্জ হাস্যকর তামাশা ছাড়া কিছু নয়। এ বহিষ্কারাদেশ সংবিধানবিরোধী।’
তারা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জমিয়তের জাতীয় কনভেনশনে তারা নিজেদের অবস্থান তুলে ধরবেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন