কুমিল্লার মুরাদনগরে ড্রেজার-ভেকু-ও মাটিবাহী ট্রাক্টরের তান্ডবে মরছে মানুষ ও কৃষি জমি

কুমিল্লার মুরাদনগরে বিরতিহীন চলছে ভেকু ও মাটিবাহী ট্রাক্টর। ফলে মরছে মানুষ ও আবাদি কৃষি জমি। নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ উন্নয়নের সড়ক। বাড়ছে ধুলাবাহিত রোগজীবাণু। গত ৬০ দিনে ভেকু-ট্রাক্টর ও ড্রেজারের গর্তে ৪ জন মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

এ উপজেলায় মাটিকাটার অবৈধ যন্ত্রপাতি জব্দে হাইকোর্টের রিট পিটিশন থাকার পরেও দেদারসে চলছে ড্রেজার-ভেকু ও মাটিবাহী ট্রাক্টর। প্রশাসন বলছেন অভিযান অব্যহত।

জানা যায়, ‘জাতীয় ভূমি ব্যবহার নীতি ২০১০’ এবং ‘কৃষিজমি সুরক্ষা ও ভূমি জোনিং আইন ২০১০’ অনুসারে কৃষি জমি-কৃষি কাজ ব্যতীত অন্য কোনও কাজে ব্যবহার করা যাবে না।

কোন কৃষি জমি ভরাট করে বাড়িঘর, শিল্প-কারখানা, ইটভাটা বা অন্য কোন অকৃষি স্থাপনা কোনওভাবেই নির্মাণ করা যাবে না । এমনটি উল্লেখ থাকলেও মুরাদনগরের কৃষি জমি প্রতিনিয়ত ব্যবহƒত হচ্ছে অকৃষি কাজে। এ ছাড়া জলাধার সুরক্ষা আইন, বনভূমি ও পাহাড় রক্ষায়ও আইন রয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো কোন আইনেরই যথাযথ প্রয়োগ নেই। কমছে কৃষি জমির পরিমাণ। অপরিকল্পিত বাসাবাড়ি ও জলধার সৃষ্টির ফলে মাথাপিছু আবাদযোগ্য জমি কমতে কমতে প্রান্তসীমায় এসে দাঁড়িয়েছে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) আগের এক গবেষণা থেকে জানা যায় , দেশে মোট জমির পরিমাণ ১৪ দশমিক চার মিলিয়ন হেক্টর। ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে এ জমি ভাগ করলে জনপ্রতি পাবেন ২৪ শতাংশ, চাষযোগ্য জমি পাওয়া যাবে ১৫ শতক। সবচেয়ে আশঙ্কার কথা হলো বছরে কমছে দুই লাখ একর কৃষি জমি আর বাড়ছে প্রায় ২৫ লাখ মানুষ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পাভেল খানঁ পাপ্পু বলেন, মুরাদনগর উপজেলায় গত চার বছরে ১৬২ হেক্টর কৃষি জমি ড্রেজিং রাস্তাঘাট, ইটভাটা, বাড়িঘর নির্মাণসহ নানা কাজে নষ্ট হয়েছে। এখানে চাষাবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ২৪ হাজার ২৯৩ হেক্টর। এর মধ্যে বেশির ভাগ জমিই দুই থেকে তিন ফসলি। কৃষি জমি রক্ষায় আমরা কৃষকদের নানা ভাবে উদ্বুদ্ধ করছি। এভাবে কৃষি জমি নষ্ট হলে একসময় মুরাদনগরেও খাদ্যসংকট দেখা দিতে পারে।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলাউদ্দিন ভূইয়া জনী বলেন, ড্রেজার বন্ধে অভিযান অব্যাহত আছে। ভেকু ও ট্রাক্টরেগুলো ভ্রমান আদালতে জরিমানা করা হচ্ছে। সকলের সম্মলিত প্রচেষ্টা ছাড়া ড্রেজার নিমূর্ল করা সম্ভব না।