কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে প্রচন্ড তাপদাহে বিপর্যস্ত জন জীবন
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে টানা দুই সপ্তাহের তীব্র তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তীব্র রোদ আর ভ্যাপসা গরমে সাধারণ ও কর্মজীবী মানুষেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।এতে চরম দূর্ভোগে পোহাতে শিশু ও বয়স্কদের।বৃষ্টিহীন তীব্র গরমে আগামী ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত কোন সুখবর নেই বলে জানিয়েছে কুড়িগ্রাম আবহাওয়া অফিস।
প্রখর রোদের সাথে তাপমাত্রা বাড়ার কারণে শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষজন চরম বিপাকে পড়েছে। তীব্র খড়তাপে দিন মজুর, রিকশা, ঠেলা ও ভ্যানচালকরা কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছে। আবার অনেকেই জীবন-জীবিকার তাগিদে প্রচন্ড তাপদাহ উপেক্ষা করে কাজে বেড়িয়েছেন। তীব্র গরমে বয়স্ক, শিশুরা পড়েছে সব থেকে বেশি ভোগান্তিতে।
গত এক সপ্তাহ ধরে ভূরুঙ্গামারীতে তাপমাত্রা গড়ে ৩৫ ডিগ্রী ওঠানামা করছে। সামনে আরো তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার আশংকা রয়েছে। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে জীব-বৈচিত্রের উপরও। এমন প্রচন্ড গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে গোটা উপজেলাবাসীর। এতে করে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষজন। একটু শীতলতার জন্য শিশু-কিশোর সকলেই পুকুর-নদী,বিলে ছোটাছুটি করছে। অসহনীয় প্রচন্ড গরমে শিশু ও বয়স্করা জ্বর-সর্দি ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। তীব্র তাপদাহে কয়েকদিনে হাট-বাজারে মানুষের সমাগম কমে গেছে।
ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা রুহুল আমিন, রিয়াজ ও মাহবুব বলেন, প্রচন্ড গরম পড়ছে। বাচ্চা নিয়ে খুবই সমস্যায় আছি। ঘরের মধ্যে থাকা যায়না। বাইরে গেলেও স্বস্তি নেই।বাতাস বইছে না।গাছের পাতাও নড়াচড়া করেনা।আমাদের সন্তান গত কয়েকদিন থেকে জ্বর-সর্দি ও কাশিতে ভোগছে।
উপজেলার চরভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ভ্যান চালক দুলাল মিয়া ও জয়মিনরহাট ইউনিয়নের ছালাম মিয়া বলেন, গত এক সপ্তাহে প্রচন্ড তাপদাহের কারণে ঠিকমতো কাজে যেতে পাচ্ছি না। গরমে কাজ করতে না পেয়ে আয় কমে গেছে। আগে দিনে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করা যেতো। তীব্র রোদে ঘর থেকে বের হওয়ায় যায়না। প্রচন্ড গরম আর রোদের কারণে সারা দিনে ২০০ টাকা আয় করা মুশকিল হয়ে পড়েছে।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভ্যান চালক ফরমান আলী ও জোনাব আলী বলেন, কয়েক দিন থেকে ধরে যে তাপ উঠছে ভ্যান নিয়া পাকা রাস্তায় বের হওয়া যাচ্ছে না। চাকা পানচার হয়ে যায় গরমে। এই গরমের মধ্যে ভাড়াও কমে গেছে। জানি না এ রকম প্রখর রোদ আর কত দিন থাকবে।
উপজেলার পাইকের ছড়া ইউনিয়নের রিকশা চালক আব্দুস সাত্তার ও জহুরুল হক জানান, জীবন-বাঁচার তাগিতে রিকশা চালিয়ে আমাদের সংসার চলে। গত কয়েকদিন ধরে এত তাপদাহ সহ্য করার মত নয়। পেটে খেলে সব কিছুই সহ্য করতে হয়। তাই প্রচন্ড গরমেই রিকশা চালাচ্ছি। এক আট্টা ক্ষ্যাপ মেরে আবার গাছ তলায় রিকশার মধ্যেই বসে শুয়ে একটু দম নেই।
কুড়িগ্রাম রাজারহাট আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সবুর মিয়া বলেন, আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় দিনের তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভবনা আছে। গত বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) কুড়িগ্রামে দিনের তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়ার্স। জেলা জুড়ে গত এক সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়ার্সে উঠানামা করছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন