সাতক্ষীরার শ্যামনগরে উপকূল রক্ষা বাঁধ নদীতে বিলীন! দূর্গাবাটি গ্রাম প্লাবিত

উপকূলবর্তী সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়নের পশ্চিম দুর্গাবাটির সাইক্লোন শেল্টার সংলগ্ন অংশের উপকূল রক্ষা বাঁধ পাশের খোলপেটুয়া নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে দূর্গাবাটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানি ঢুকতে শুরু করেছে আড়পাঙ্গাশিয়া ও পোড়াকাটলা গ্রামে।

বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) বিকাল পাঁচটার দিকে সেখানকার প্রায় ২শ ফুট জায়গাজুড়ে বাঁধ খাটাভাবে নদীতে ধসে পড়ে। রাতের জোয়ারে প্লাবিত হয় গ্রামটি। স্থানীয়দের দাবি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের পওর বিভাগ শ্যামনগরের ৫ নং পোল্ডারের উক্ত অংশের বাঁধ দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ন অবস্থায় ছিল। তবে শুক্রবার (১৫ জুলাই) সকাল থেকে বাশ পাইলিং দিয়ে মাটি ফেলে রিং বাঁধ নির্মানের চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

ভাঙন কবলিত অংশের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য নীলকান্ত রপ্তান জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে হঠাৎ বিকট শব্দে সাইক্লোন শেল্টারের পুর্বপ্রান্তের উপকূল রক্ষা বাঁধের ৬০/৭০ ফুট জায়গা খোলপেটুয়া নদীতে ধ্বসে পড়ে। রাতে স্থানীয়রা ভাঙনের বিস্তৃতি ঠেকানোর কাজ শুরু করে।

নিলুৎপল মন্ডল নামের স্থানীয় এক গ্রামবাসী জানান, ভাঙনের খবর পেয়ে সকালে তারা ঘটনাস্থলে পৌছেছে রিং বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। পরবর্তী জোয়ারের আগে ভাঙন কবলিত অংশে রিং বাঁধ দিতে না পারলে জোয়ারের পানি পশ্চিম ও পুর্ব দুর্গাবাটিসহ ভামিয়া, পোড়াকাটলা, চুনা ও হেঞ্চি গ্রামগুলোকে প্লাবিত করতে পারে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, দুর্গাবাটির বিভিন্ন অংশে কোটি কোটি টাকার কাজ করা হলেও ভাঙনকৃত অংশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মাটির কোনো কাজ করা হয়নি। এছাড়া প্রভাবশালীরা পাশের নদী হতে কোটি কোটি ঘনফুট বালু উত্তোলন করায় চর দেবে গেছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কেউ তদারকি করেননি।

বুুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ নজরুল ইসলাম জানান, স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রম ভিত্তিতে রিং বাঁধ নির্মানের কাজ শুরু করেছে। তবে দুপুরের জোয়ারে কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। জোয়ার নামতে নামতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে । সন্ধ্যায় কাজ করা কঠিন হবে। তিনি অভিযোগ করেন পাশের খোলপেটুয়া নদী থেকে অবৈধভাবে প্রভাবশালীরা বালু উত্তোলন করায় চর দেবে যেয়ে পাশ্ববর্তী অংশের বাঁধে ভাঙন লেগেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের শ্যামনগর অঞ্চলের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জাকির হোসেন জানান, খোলপেটুয়া নদীর চর দেবে যাওয়ার কারণে ৪০ মিটার বাঁধ ধ্বসে পড়েছে। আমরা ১৬০ মিটার রিংবাঁধ দেব। সকাল থেকে বাশ পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়েছিল। তবে জোয়ার আসায় কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে। পুরো দিনই জোয়ার থাকায় কাজ করার সুযোগ থাকছেনা। রিংবাঁধ নির্মাণের জন্য ১৫ হাজার জিওব্যাগ ও ১লাখ সিনথেটিক ব্যাগ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই কর্মকর্তা।