খাওয়ার পানি সংকটে সুন্দরবনের জীব জন্তু, ৫৪টি পুকুরের ৫৩টিতেই লবন পানি

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে, লবণাক্ত পানিতে সুন্দরবনের অনেক রকম ক্ষতি হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

একদিকে যেমন পানিতে ডুবেছে অনেক জিনিস তেমনি লবণাক্ত পানির প্রভাবে দেখা দিয়েছে পশুপাখির সুপেয় পানির সংকট।

তবে বন্যপ্রাণীরা উঁচু স্থানে আশ্রয় নেওয়ায় তাদের মৃত্যু কম হয়েছে বলে বনকর্মীদের ধারণা।

সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের কর্মকর্তা আবু নাসের মোহসীন হোসেন বলেন, বনের পশ্চিম অংশে ৫৪টি পুকুরের মধ্যে ৫৩টিতে লোনা পানি ঢুকেছে। এতে পশুপাখির সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে। বনের মধ্যে কর্মরত বনকর্মী, জেলে ও বাওয়ালি ছাড়াও পশুপাখি এসব পুকুর থেকে পানি পান করে থাকে।

তিনি বলেন, পাঁচ-ছয় ফুট উঁচু জোয়ারে বেশ কিছু জলযান, ওয়াচ টাওয়ার, গোলঘর ও ফুটরেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্তত চারটি হরিণ জলোচ্ছ্বাসে ডুবে মারা গেছে। ১২টি কাঠের জেটি, কয়রা ও বজবজিয়ায় ৩৫টি ফাঁড়ি ও স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের কর্মকর্তা মাহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, ভারী বৃষ্টি, জোয়ার ও পানি বৃদ্ধির কারণে পূর্ব সুন্দরবনের ১৯টি জেটি, ছয়টি ট্রলার, দুটি গোলঘর, একটি ফুটরেল, একটি ওয়াচ টাওয়ার, চারটি স্টাফ ব্যারাক, একটি রেস্ট হাউজ ও দুটি অফিসের রাস্তার ক্ষতি হয়েছে। নয়টি মিঠাপানির পুকুরে লবণাক্ত পানি ঢুকেছে।

করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ বলেন, জলোচ্ছ্বাসে ও বাতাসে দুটি কুমিরের শেড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানির স্তর বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রের প্রাণীগুলো নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ায় তাদের কোনো ক্ষতি হয়নি।

সুন্দরবনের দুবলা জেলে পল্লির প্রশাসনিক কর্মকর্তা তানভীর হাসান ইমরান জানান, উঁচু জোয়ারে সময় বন্যপ্রাণীদের বনের মধ্যে তুলনামূলক উঁচু স্থানে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে। মঙ্গলবার রাতে জোয়ারের সময় বঙ্গোপসাগর–সংলগ্ন দুবলা জেলে টহল ফাঁড়ির ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয় বেশ কিছু হরিণ। বুধবার দুপুরের জোয়ারের সময়ও ফাঁড়ির পুকুরপাড়ে কিছু হরিণ ও হরিণ শাবকদের আশ্রয় নিতে দেখা গেছে।

আশপাশ তলিয়ে যাওয়ায় টহল ফাঁড়ি এলাকায় বিভিন্ন জাতের সাপের আনাগোনা দেখা গেছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।