সাতক্ষীরার প্রতাপনগরে পানিতে দাঁড়িয়ে জুম্মার নামাজ আদায় মুসল্লীদের

চারিদিকে শুধু পানি আর পানি। দুঃখ, দূর্দশা যন্ত্রণায় মানুষ। চারিদিকে শুধুই কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর লবণাক্ত বিষাক্ত জোয়ার ভাটার লোনাপানির ধারা বয়ে চলেছে। যাদের দেখার দায়িত্ব তারা নির্লিপ্ত। ফলে প্রতাপনগর ইউনিয়নের ৩০ হাজার মানুষ এখন পানিবন্দী। প্রতিটি মানুষের ঘর দুয়ারে পানি আর পানি। বাদ পড়িনি ধর্মীয় উপাসনালয় মসজিদ মন্দির স্কুল মাদ্রাসা, কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নেই পর্যাপ্ত নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র।

সাগর নদী আর প্রতাপনগর ইউনিয়নের জনপদ মিলে মিশে একাকার হয়ে আছে। অস্বাভাবিক পানির তোড়ে ভেসে গেছে মৎস্য ঘের। বিগত বছরের আম্পানের ক্ষত না কাটতেই দুটি মাস পার না হতেই উপকূলীয় এ অঞ্চলের মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ায় মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। মানুষ তার দুর্বিষহ কষ্ট যন্ত্রণার কথা বলতে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে। খাওয়া পানি, রান্না খাওয়া, প্রাকৃতিক কাজ সবকিছুই শীমাহীন কষ্ট সহ্য করে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে উপকূলীয় অঞ্চলের প্লাবিত অবস্থার মানুষেরা।

২৬ মে ঘুর্নিঝড় ইয়াস এর প্রভাবে উপকূলীয় প্রতাপনগর ইউনিয়নের মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের ৯ টি পয়েন্ট থেকে ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত হয়ে জোয়ার ভাটা চলছে। বিগত বছরের ঘূর্ণিঝড় আম্পানসহ বিগত দিনের তুলনায় নদীর পানি স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়েও প্রায় দুই তিন ফুট পানির বেশী উচ্চতা লক্ষ্য করা গেছে।

এদিকে লবণাক্ত পানির তীব্রতার কারণে অনেকের বসত ঘর বাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এর মাঝে (২৮ মে) শুক্রবার মাজা পানিতে দাঁড়িয়ে জুম্মার নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে প্রতাপনগর ৫ নম্বর ওয়ার্ড হালদার বাড়ী জামে মসজিদে ধর্মপ্রাণ মুসল্লীদের। তারা জানান ‘আমদের ঘরের মধ্যি মাজা পানি, মসজিদেও মাজা পানি। তাই মসজিদে নামাজ আদায় করতে আইছি। আগে তাও পানি আসলি ভাটায় সরি যেতু এবার তাও যেতিস না। কি করি যে আমরা বসবাস করবো জানিনে। ২ মাস যাতি না যাতি আবার ভাসতিস আমরা’। এসময় সকলে মিলে টেঁকসই বেড়িবাঁধের জন্য সরকারের কাছে দাবী জানান।