খাগড়াছড়িতে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র মোকাবেলায় প্রশাসনের ব্যাপক প্রস্তুুতি, খোলা হলো নিরাপদ ১১টি আশ্রয়কেন্দ্র
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাতে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র মোকাবেলায় প্রশাসনের ব্যাপক প্রস্তুুতি, খোলা হলো নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। জেলাতে প্রস্তুুত ১১টি আশ্রয় কেন্দ্র, চলছে মাইকিং। ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র মোকাবেলায় ও পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়ার জন্য মাঠে নেমেছেন প্রশাসন।
শনিবার(১৩ই মে) বিকেলে জেলা প্রশাসক মো: সহিদুজ্জামান ও পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরীসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন।
এদিকে খাগড়াছড়ি জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে জেলায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অবস্থান করার জন্য ও নিরাপদ আশ্রয় অবস্থান নেয়ার জন্য সতর্কতামূলক জারি ঘোষণা করে মাইকিং চলছে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো: সহিদুজ্জামান জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলা করতে সব ধরনের প্রস্তুুতি নেওয়া হয়েছে। জেলাতে ১১টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দুর্যোগের আগাম বার্তা জানতে হটলাইন-১০৯৪১ নাম্বার চালু করা হয়েছে।
জেলাতে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র মোকাবেলায় ও পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়ার জন্য মাঠে নেমেছেন জেলা প্রশাসক মো: সহিদুজ্জামান, পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিনিয়া চাকমা, জেলা তথ্য কর্মকর্তা বাপ্পি চক্রবর্তী, জেলা দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তারা।
শনিবার(১৩ই মে) সকাল থেকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, গণযোগাযোগ অধিদপ্তর খাগড়াছড়ি জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে জেলায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অবস্থান করার জন্য ও নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নেয়ার জন্য সতর্কতামূলক জারি ঘোষণা করা হয়। বিকেল ৫টার দিকে জেলা প্রশাসক পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারীদের পরিদর্শনে গিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেন।
পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবের ক্ষয়ক্ষতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে নিয়ে আসা এবং এর প্রভাবে কোন রকম বিদ্যুতের সমস্যা না হয়। শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সমস্যার সম্মুখীন না হয়। আমরা এখানে সাময়িকভাবে বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় কেন্দ্র খুলেছি। পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত জনসানুষের জন্য। আশ্রয় কেন্দ্রে আমরা চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেছি। তিনি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত সকলকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ জানান।
মোখা ঘূর্ণিঝড়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে খাগড়াছড়িতে সাময়িকভাবে ১১টি নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। কেন্দ্রসমূহ: শালবন ডরমেটরি, শিশু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খাগড়াছড়ি কলেজিয়েট স্কুল, মুসলিম পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খাগড়াছড়ি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র(টিটিসি), খাগড়াছড়ি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ, কুমিল্লাটিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় সকল উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত সাময়িকভাবে আশ্রয় কেন্দ্র সমূহ(স্কুল/কলেজ/ইউনিয়ন পরিষদ)।
দুর্যোগের আগাম বার্তা জানতে হটলাইন-১০৯৪১ নাম্বার কল চালু করা হয়েছে। এছাড়াও নদীর পানির প্রবাহ মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকে স্রোতের সাথে ভেসে আসা কাঠসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম সংগ্রহ করতে স্রোতে নেমে পড়ে। এতে মৃত্যুর মুখে পতিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বিধায় বিপদজনক স্রোতের মধ্যে নদীতে না নামার জন্য সর্বসাধারণকে অনুরোধ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ স্থান ত্যাগ করুন, সাময়িকভাবে আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিন, সকলেই সতর্কতা অবলম্বন করুন, দুর্যোগ মোকাবেলায় এগিয়ে আসুন।
প্রসঙ্গত; বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় “মোখা” উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে অবস্থান করছে। ক·বাজারে ১০নম্বর মহাপবিপদ সংকেত ও চট্টগ্রাম সমূদ্র বন্দও সমূহকে ৮নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় “মোখা”র প্রভাবে খাগড়াছড়ি জেলায় ভারী বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অতিরিক্ত ভারী বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়ার ফলে পাহাড় ধস, আকস্মিক বন্যাসহ অন্যান্য দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে। তাই, পাহাড়ে, পাহাড়ের পাদদেশে ও ঝুঁকিপূর্ণস্থানে বসবাসরত সর্বসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণ করতে আহ্বান জানানো হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন