গাইবান্ধায় করোনায় উদাসীন জনতা, বাড়ছে সংক্রমণ

গাইবান্ধা জেলায় করোনা পরিস্থিতির দিন দিন অবনতি হচ্ছে। সংক্রমণ রোধে চলমান রয়েছে লকডাউন। তবে এই লকডাউন মানতে মানুষের মাঝে উদাসীনতা দেখা দিয়েছে।

বুধবার গাইবান্ধা জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলা শহর ও হাট- বাজারে দেখা যায় মানুষের অবাধ পদাচারণ। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে মাস্ক ছাড়াই তারা জনসমাগম স্থলে নির্বিকারে চলাচল করছে।

জানা যায়, গত জুন মাসে গাইবান্ধা জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছিল ৩৭৩ জনের। এরপর ধীরে ধীরে সংক্রমণ বাড়তে থাকে। যার ফলে চলতি মাসের ২৫ দিনে এই জেলায় নতুন করে আরও ১ হাজার ৩৭৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। মত্যুবরণ করেছে ১৩ জন করোনা রোগী। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে গাইবান্ধা জেলাকে করোনার হটস্পট ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

লকডাউন বাস্তবায়নে প্রশাসনসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক মাঠে রয়েছে। বিনা প্রয়োজনে মানুষকে ঘরের বাহিরে যাওয়া ঠেকাতে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে তারা। কিন্তু সেটি মানছে না এ অঞ্চলের মানুষ। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে রাস্তাঘাটে বিভিন্ন যানবাহনে ঘুরে বেড়াচ্ছে তারা। শপিংমল, হাট-বাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও খোলা রাখা হয়েছে কৌশলে। অনেকে বিয়ের অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন ধরণের সভা-সেমিনার করছে। বিশেষ করে গ্রামের মানুষ বিধি-নিষেধ কিংবা স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। যার কারণে ঘরে ঘরে দেখা দিয়েছে জ্বর-সর্দি-কাশির প্রাদুর্ভাব। একই পরিবারের একাধিক মানুষ এমন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এমন কি তাদের করোনা উপসর্গ দেখা গেলেও নমুনা পরীক্ষা করতে নারাজ তারা। অনেকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, এমনটা নিশ্চিত জেনেও আইসোলেশনে না থেকে পরিবার ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে মেলামেশা করছেন। তাদের স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে গাইবান্ধায় সংক্রমণের হার বেড়েই চলছে।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক সিএনজি চালক বলেন, ‘টানা লকডাউনের কবলে থমকে গেছে জীবন-জীবিকা। এভাবে ঘরে বসে থাকলে না খেয়ে মরতে হবে। তাই বাঁচার তাগিদে লকডাউন ভঙ্গ করে গাড়ি নিয়ে যাত্রী বহন করছি।’

এ বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মো.আবদুল মতিন বলেন, ‘কোভিড-১৯ বিস্তার রোধে লকডাউন বাস্তবায়নে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা মাঠে কাজ করছেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বিধি-নিষেধ মানাতে মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে। এটি যারা মানছেন না তাদের জরিমানাও করা হচ্ছে।’
এছাড়া শ্রমজীবী কর্মহীন পরিবারের মাঝে নগদ অর্থসহ বিভিন্ন ধরনের খাদ্য-সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।