চীনের ‘আজীবন প্রেসিডেন্ট’ জিনপিং?
প্রেসিডেন্ট পদে সর্বোচ্চ দুই মেয়াদ থাকার আইন তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদনের পথে রয়েছে চীন। যদি তাই হয়, বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং হয়ে যেতে পারেন দেশটির আজীবন প্রেসিডেন্ট।
এই আইন বিলোপের ঘটনাটি চীনের সংবিধানে প্রস্তাবিত কিছু পরিবর্তনের অংশ। প্রস্তাবগুলো রোববার অনুষ্ঠিতব্য ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস-এর বার্ষিক বৈঠকে পাস হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চীনের একজন প্রেসিডেন্ট সর্বোচ্চ দুই মেয়াদ ক্ষমতায় থাকতে পারবেন – ৯০’এর দশক থেকে সংবিধানে পরিবর্তন এনে এই আইন কার্যকর হয়।
সেই আইন অনুযায়ী, ২০১৩ সালে প্রেসিডেন্ট হওয়া শি জিনপিং ও তার সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট পাঁচ বছর করে দুই মেয়াদে মোট ১০ বছরের বেশি দায়িত্বে থাকতে পারবেন না। অর্থাৎ ২০২৩ সালে জিনপিংয়ের ক্ষমতার সমাপ্তি ঘটার কথা।
চীনের সংবিধান অনুসারে, ক্ষমতা ছাড়ার আগেই পরবর্তী নির্বাচনের জন্য নিজের উত্তরসূরি বেছে নিতে হয় প্রেসিডেন্ট ও তার দলকে।
কিন্তু প্রচলিত রীতি ভেঙ্গে এখন পর্যন্ত ঘোষণা করা হয়নি জিনপিংয়ের কোনো উত্তরসূরিও। বরং গত বছর তাকে মাও সে তুংয়ের পর সবচেয়ে ক্ষমতাশালী নেতার স্বীকৃতি দেয় তার দল চীনা কমিউনিস্ট পার্টি।
জিনপিংয়ের নাম আদর্শকে দলের সংবিধানেও যুক্ত করার মাধ্যমে তাকে দেয়া হয় একচ্ছত্র ক্ষমতা। এর ফলে তার মর্যাদা বেড়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা নেতা মাও সে তুংয়ের সমপর্যায়ে।প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-চীন
শুধু তাই নয়, ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ঘোষণা দেয়া হয়, ২০২৩ সালের পরেও শি জিনপিংকে প্রেসিডেন্ট পদে আসীন দেখতে চাইছে দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি। আর তাই সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব করেছে দলটি।
তারই ধারাবাহিকতায় রোববার কংগ্রেসে ভোট হতে যাচ্ছে। আগের ঘোষণার সময় জিনপিংকে ঠিক কত বছর ক্ষমতায় রাখার কথা ভাবা হচ্ছে তা খোলাসা করা না হলেও ৫ মার্চ দেশটির ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের পূর্ণ অধিবেশনে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয় প্রেসিডেন্ট পদে মেয়াদ বেঁধে দেয়ার সীমাবদ্ধতা তুলে দিয়ে তাকে আজীবন প্রেসিডেন্ট করার প্রস্তাব দেবার।
বিশ্লেষকদের ধারণা, রোববারের ভোটে কোনো জটিলতা ছাড়াই সংবিধানের পরিবর্তনগুলো পাস হয়ে যাবে। কেননা, কাগজে কলমে চীনের ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস অন্যান্য দেশের পার্লামেন্টের মতোই দেশের সর্বোচ্চ আইনি প্রতিষ্ঠান হলেও অভিযোগ রয়েছে, এটি আসলে শুধু একটা ‘রাবার স্ট্যাম্প মারা’ প্রতিষ্ঠান। রাষ্ট্রপ্রধান তাকে যা বলবেন তা-ই পালন করবে এই কংগ্রেস।প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-চীন
কিন্তু এই অভিযোগের পরও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ধারণা করা হচ্ছে, আগে কখনো কংগ্রেস কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে ভোট না দিলেও এবার ২ হাজার ৯৮০ প্রতিনিধি ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকতে পারেন, যা স্পষ্টতই প্রেসিডেন্ট পদের মেয়াদে সীমাবদ্ধতা তুলে দেয়ার প্রতিবাদ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন