চুয়াডাঙ্গায় বিতর্কিত মোনাজাতে মডেল মসজিদের ইমাম বরখাস্ত
গাংনী মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ঈমাম হাফেজ মাওলানা ইলিয়াছ হোসেনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
ঈমাম মাওলানা ইলিয়াস হোসেন চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার নওদা হাঁপানিয়া গ্রামের রমজান আলীর ছেলে।
জানা গেছে, গত ১৫ আগস্ট বরখাস্তকৃত ইমাম মাওলানা ইলিয়াছ হোসেন ফজরের নামাজ শেষে যুদ্ধাপরাধের মামলায় আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর জন্য দোয়া ও মোনাজাত করেন।
এ ঘটনায় গাংনী উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুনতাজ আলী জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হয়। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনকে নির্দেশ দেন মেহেরপুর জেলা প্রশাসক। পরে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাঠ পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম তাকে দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
এছাড়াও পরবর্তী ঈমাম নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত মডেল মসজিদের মোয়াজ্জিনকে ইমামের দায়িত্ব পালন করতে বলেন।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া সিদ্দিকা সেতু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মাওলানা ইলিয়াস হোসেন ২০১৩ সাল থেকে গাংনী উপজেলা জামে মসজিদের পেশ ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। পরে গাংনী মডেল মসজিদ নির্মাণ হওয়ার পর অন্য ইমাম নিয়োগ না দিয়ে ইলিয়াস হোসেন মডেল মসজিদের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
এ বিষয়ে মাওলানা ইলিয়াস হোসেন বলেন, ১৫ আগস্ট ফজরের নামাজ শেষ করে মসজিদে বসে সকল মৃত মানুষের জন্য দোয়া করার সময় দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীর নামেও উল্লেখ করা হয়। কয়েকদিন পর গাংনী উপজেলা নির্বহী অফিসার সাজিয়া সিদ্দিকা সেতু আমাকে অফিসে ডেকে বিষয়টি জিজ্ঞেস করলে সব খুলে বলি। তখন তিনি আমার ওপর রাগান্বিত হন এবং আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান। এছাড়া আমাকে কোনো প্রকার নোটিশ বা আইনী প্রক্রিয়া ছাড়াই গত ২৪ সেপ্টেম্বর মৌখিকভাবে ইমামতি করতে নিষেধ করে। পরে (২৭ সেপ্টেম্বর) বুধবার দুপুরে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া সিদ্দিকা সেতু স্বাক্ষরিত একটি অব্যহতি পত্র হাতে পেয়েছি।
এ ব্যাপারে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ—পরিচালক সিরাজুম মনির বলেন, গাংনী মডেল মসজিদের ইমাম মাওলানা ইলিয়াস হোসেনের বিরুদ্ধে স্থানীয় এক মুক্তিযোদ্ধা বির্তকিত মোনাজাতের জন্য গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দেন। এ নিয়ে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে বিষয়টি তদন্ত করে তার সত্যতা মেলে। পরে সেখান থেকে তাকে অব্যহতি দেয়ার নির্দেশ দিলে ইলিয়াস হোসেনকে ইমামতি থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মাওলানা ইলিয়াস হোসেন মডেল মসজিদের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত নন। মডেল মসজিদ হওয়ার আগে সেখানে থাকা মসজিদের ইমাম তিনি। মডেল মসজিদের জন্য সামনের মাসে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজিয়া সিদ্দিকা সেতু বলেন, ওই ইমামের বিরুদ্ধে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়। সেই অভিযোগ তদন্ত প্রমাণিত হওয়ায় ইমামকে ইমামতি থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। পরবর্তী নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত মসজিদের মোয়াজ্জিনকে ইমামের দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন