জিয়ার আমলেই দেশ ছিল কারাগার- তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ বলেছেন, জিয়াউর রহমানই কারফিউ দিয়ে দেশকে কারাগার বানিয়ে রেখেছিলেন। ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান যাদের সংক্ষিপ্ত বিচার এবং বিনা বিচারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছিল, তাদের পরিবারের সদস্যরা আজও কাঁদছে।
আজ সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) সভাপতি তপন বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ উল হক ও নেতৃবৃন্দ মন্ত্রীকে আওয়ামী লীগের শীর্ষ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ায় ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এরপর মতবিনিময়কালে সাংবাদিকরা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খানের সাম্প্রাতিক এক মন্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করলে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
ড. হাছান বলেন, ড. মঈন খান হয়তো ভুলে গেছেন, তার বাবা তখন জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় খাদ্যমন্ত্রী ছিলেন। তখন পুরো দেশে কারফিউ দিয়ে রাখা হতো। রাত ১০ টার পর থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম শহরসহ বড় বড় সব শহরে কারফিউ থাকতো। পুরো শহর ছিল কারাগার। কারফিউ মানেই তো কারাগার। কেউ ঘর থেকে বের হতে পারবে না। আজকে কি সেই পরিস্থিতি আছে! মঈন খান জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ, তার প্রতি সম্মান রেখেই বলতে চাই, তার বাবার আমলটা যদি একটু মনে করেন, তাহলে বুঝতে পারবেন। আসলে তিনি তার বাবার আমলের কথা বলেছেন অর্থাৎ জিয়ার আমলের কথা যখন পুরো দেশটাকে কারাগার বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশে গুম, খুন শুরু করেছিল’ উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছিল, খুন করা হয়েছিল, মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছিল। যাদেরকে ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান সংক্ষিপ্ত বিচার এবং বিনা বিচারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছিল, তাদের পরিবারগুলো ‘মায়ের কান্না’ সংগঠনের সদস্যরা রাস্তাঘাটে কেঁদে বেড়াচ্ছে। আর মঈন খান সাহেবের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আহ্বানে তাদের কর্মীরা ২০১৩-১৪-১৫ সালে যাদেরকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছিল, তাদের সংগঠন হচ্ছে ‘অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ। তাদের আর্তনাদও আজকে বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাছান মাহ্মুদ বলেন, আমি মঈন খান সাহেবসহ বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের আয়নায় নিজেদের চেহারাটা ভালোভাবে দেখার জন্য এবং তারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখনকার পরিস্থিতি একটু মনে করার জন্য সবিনয়ে অনুরোধ জানাই। এই দেশে অপরাজনীতি, গুম, খুন এগুলো বিএনপি করেছে এবং জিয়াউর রহমান এই পুরো দেশটাকে কারাগার বানিয়েছিল। বেগম খালেদা জিয়াও বানানোর চেষ্টা করেছে। নিশ্চয়ই মনে আছে, অবরোধের নামে তারা একশ’ দিন মানুষকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল, সেটাও তো দেশকে কারাগার বানানো। সুতরাং এই অপরাজনীতি তারাই করে।
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহ্মুদ বলেন, ‘আমি কাগজে দেখেছি যে, নকশা বহির্ভূতভাবে সারিনা হোটেল ১৫ তলার অনুমোদন নিয়ে ২১ কি ২২ তলা করা হয়েছে। ১৫ তলার অনুমোদন নিয়ে ২২ তলা করলে সেটা তো গর্হিত কাজ, আইন বহির্ভূত কাজ। সেটিই দুদক খুঁজে বের করেছে এবং মামলা করেছে। যারা আইন প্রণেতা হতে চায়, তাদের তো আইন বহির্ভূত কাজ করা উচিত নয়। এ ধরনের কাজ উনাদের আরো অনেকেই করেছেন। সেগুলোও আস্তে আস্তে বেরিয়ে আসবে।
মেট্রোরেলের ভাড়া নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, ‘মেট্রোরেল চালু হচ্ছে এটিই খুশির বিষয়। আমাদের দেশে কেউ ভাবেনি যে, এভাবে মেট্রোরেল হবে। প্রধানমন্ত্রী মেট্রোরেল উদ্বোধন করছেন। ধীরে ধীরে এই মেট্রোরেল আরো সম্প্রসারিত হবে। আজকে সমগ্র দেশের মানুষ উন্মুখ হয়ে বসে আছে যে মেট্রোরেল চালু হবে এবং মানুষ চড়বে। মেট্রোরেলের মাসিক ভাড়া কিন্তু অনেক কম। এমনি টিকিট করলে এক ধরনের ভাড়া। আবার ত্রৈমাসিক বা সাপ্তাহিক ভাড়াও অনেক কম। আমি ঠিক করেছি আমার নির্বাচনি এলাকার উৎসাহী গ্রামের মানুষদের মেট্রোরেলে চড়াবো।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন