ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে সরকারী বিলে প্রভাবশালীদের পুকুর খননের অভিযোগ
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে সরকারী ধরধরিয়া বিলের জমিতে অবৈধ ভাবে পুকুর খনন করার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে।
এ নিয়ে ভুমিহীন ও প্রভাবশালীদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে ২৪ মে বুধবার দুপুরে পুকুর খনন কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন প্রশাসন। এ দিকে এ বিলের প্রায় সাড়ে ৩৩ একর জমি ২০৫টি ভুমিহীন পরিবারকে ভোগদখল করার সুযোগ দেয়ার দাবীতে বুধবার জেলা প্রশাসকের কাছে ভুমিহীনদের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। তবে উপজেলা প্রশাসন বলছেন, বিলের জমি নিয়ে একাধিক পক্ষ তৈরী হয়েছে এবং এ নিয়ে মামলাও চলছে। সরকারী স্বার্থ সংরক্ষন করতে বিলে পুকুর খনন কাজ বন্ধ করা হয়েছে।
পীরগঞ্জ উপজেলার সেনগাও ইউনিয়নের আগ্রা গরিনাবাড়ি ভুমিহীন সংগঠনের সভা প্রধান অশোক চন্দ্র রায় জানান, উপজেলার আগ্রা গরিনাবাড়ি ও দস্তমপুর মৌজায় ধরধরিয়া বিল অবস্থিত। এ বিলের আগ্রা গরিনাবাড়ি অংশে সরকারি ১ নং খাস খতিয়ান ভুক্ত ৩৩.৪৫ একর জমি রয়েছে। এ অংশ আগ্রা গরিনাবাড়ি ভুমিহীন সংগঠনের ২০৫ টি ভুমিহীন পরিবার দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখল করে আসছেন। গত ১ বৈশাখ থেকে কতিপয় প্রভাবশালী বিলের জমি দখল করার পায়তারা করছে। তারা ভুমিহীনদের নামে মামলা দায়ের করা সহ নানা ভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছেন। কয়েক দিন আগে দুই জন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বিলের মাঝে পুকুর খনন করার জন্য এসকে ভেটর মেশিন নামানো হয়। এতে বাধা দেন ভুমিহীনরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় সে সময় বিলের মাঝে চারটি পুকুর খনন করেন তারা।
গত বৃহস্পতিবার এক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিলে আবারো পুকুর খনন করার জন্য দুটি এসকে ভেটর মেশিন নিয়ে আসেন। এবারও বাধা দেন ভুমিহীনরা। বাধার কারণে পুকুর খনন কাজ বন্ধ থাকলেও মঙ্গলবার রাতের আধারে মেশিন দিয়ে পুকুর খনন করা হয়। বুধবার সকালে বিষয়টি জানতে পেরে ভুমিহীনরা সমবেত হয়ে বাধা দেন। এ নিয়ে বিশৃংখল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার নজিরের নির্দেশে ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা বিলে গিয়ে থানা পুলিশের সহায়তায় পুকুর খনন কাজ বন্ধ করে দেন।
এ বিষয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদ সদস্য মোস্তাফিজার রহমান জানান, তার জানা মতে আনোয়ার চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি সেখানে মেশিন দিয়ে পুকুর কাটছেন। ভুমিহীনরা বাধা দিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে যেন বাড়া বাড়ি না হয়, সেজন্য বসতে বলা হয়েছে।
পীরগঞ্জ থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম জানান, আইন শৃংখলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে পুলিশের সহায়তায় ভুমি অফিসের লোকজন ঐ বিলে গিয়ে পুকুর খনন কাজ বন্ধ করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার নজির বলেন, বিলের জমি সরকারী ২ নং খাস খতিয়ান ভুক্ত, এ জমি নিয়ে এরই মধ্যে একাধিক পক্ষ তৈরী হয়েছে এবং মামলাও চলছে, মামলা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত যে অবস্থায় আছে, সেভাবেই থাকবে। সরকারী স্বার্থ সংরক্ষন করতে বিলে পুকুর খনন কাজ বন্ধ করা হয়েছে। আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাখাবিক রাখতে প্রশাসন সজাগ রয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন