ঠাকুরগাঁওয়ে নুসরাতের চিকিৎসার ভার নিলেন পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক

দীর্ঘ তিন মাস ধরে কুকুরের কামড়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে অসুস্থ নুসরাত। ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে বারবার রেফার্ড করেছেন রংপুরে। কিন্তু টাকার অভাবে নুসরাতের মা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঠাকুরগাঁওয়ের বাইরে নিয়ে যেতে পারেনি। অর্থাভাবে হচ্ছে না নুসরাতের চিকিৎসা গতকাল সোমবার এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয় কয়েকটি গণমাধ্যমে।

এই প্রতিবেদন ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠকের নজরে এলে মঙ্গলবার বিকাল ৪ টায় ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ সুপার ছুটে যান ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নুসরাতের কাছে। তিনি নুসরাতের সাথে দীর্ঘক্ষন কথা বলেন। নুসরাতের মায়ের কাছে নুসরাতের বিষয়ে খোঁজখবর নেন এবং নুসরাতের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তার চিকিৎসা করাতে যে কোনো ধরনের সহযোগিতা লাগলে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে আশ্বাস দেন এবং নুসরাতের সকল চিকিৎসা ভার তিনি গ্রহণ করেন।

পুলিশ সুপার এর এই মহৎ উদ্দ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন রাজনৈতিক, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

এ বিষয় ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক জানান, পুলিশ আইন-শৃঙ্খলার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের মানবিক কার্যক্রম করে। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা ঠাকুরগাঁও জেলায় বিভিন্ন ধরনের মানবিক কাজ আসতেছি দীর্ঘদিন ধরে। আমরা গতকাল একটি নিউজের মাধ্যমে জানতে পারি নুসরাত নামে একটি মেয়ে অর্থ অভাবে চিকিৎসা করাতে পারতেছে না। তখনই আমার ঠাকুরগাঁও জেলার পুলিশ তার পাশে তার চিকিৎসার জন্য সকল ধরনের দায়িত্ব নিয়েছি।

মানবিক পুলিশ সুপার এর আগেও ঠাকুরগাঁওয়ের অসহায় মানুষের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। ইতিমধ্যে তার সামাজিক কাজের প্রশংসা ছড়িয়ে পড়েছে। মানবিক কাজ করে প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। একজন মানবিক পুলিশ হিসেবেই লোকমুখে পরিচিত তিনি।

নুসরাতের পরিবার এমন সাহায্যের হাত পেয়ে, আবার নুসরাত কে নতুন করে বাঁচাতে পারবে বলে আশায় বুক বাধছে। নুসরাতের মা বলেন আমার বাচ্চা দীর্ঘ তিন মাস ধরে কুকুরকে কামুড়ে অসুস্থ। আমি রংপুর নিয়ে গেছিলাম কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারিনি। অনেকের কাছে সাহায্য চাচ্ছি। ঠাকুরগাঁও জেলার পুলিশ সুপার আমার মেয়ের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এই বিপদে। তিনি আমার যে উপকার করেছেন এটা আমি সারা জীবনেও ভুলতে পারবো না। আমি দোয়া করি আল্লাহ আমাদের পুলিশ সুপারের মঙ্গল করুক।

ঠাকুরগাঁও জেলার মানবিক পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক এর আগেও ঠাকুরগাঁও জেলায় মানবিক কাজ করে আলোচিত হয়েছেন । ঠাকুরগাঁও জেলায় যে কোন মানুষ বিপদে পড়লে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তিনি। অসহায় ও দুঃস্থদের মাঝে বস্ত্র বিতরণ নিত্য দিনেই করেন এই মানবিক পুলিশ সুপার। সর্বদায় অসহায় ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীদের নিয়ে কাজ করেন তিনি। বিভিন্ন সামাজিক কল্যাণমূলক কার্যক্রমের পাশাপাশি মানবিক কার্যক্রমেও সবসময় সাধারন জনগনের পাশে রয়েছে ঠাকুরগাঁও জেলার পুলিশ সুপার। জেলায় প্রতিটি বড় ধর্মীয় উৎসব আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পর্যবেক্ষন করেন পুলিশ সুপার।

‌উল্লেখ্যে, গত ৪ মাসে ঠাকুরগাঁও বাসীকে চমক দেখিয়েছেন একজন মানবিক পুলিশ উত্তম প্রসাদ পাঠক।তিনি একের পর এক ইতিবাচক কর্মকাণ্ড সৃজনশীলতা, কঠোর পরিশ্রম, মেধা দক্ষতা এবং মানবিক মূল্যবোধ দিয়ে পুলিশ বাহিনীকে সাধারণ জনগণের বন্ধুতে পরিণত করেছেন। এমনকি তার নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে এ জেলার সাধারণ জনগণ এবং পুলিশ ধীরে ধীরে ভালো বন্ধুতে পরিণত হচ্ছেন। রাখছেন আইনের প্রতি আস্থাও।

ঠাকুরগাঁও জেলায় যোগদানের পর আইনশৃঙ্খলার ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। তিনি এ জেলায় এসপি হিসেবে যোগদানের প্রায় চার মাসে ৭৫৩টি মামলা নিষ্পত্তির পাশাপাশি ৭৭টি মোবাইল ও ৬০ জন ভিকটিম উদ্ধার করেছেন।

সাধারণ মানুষ বলছেন হঠাৎ করেই পাল্টে গেছে অপরাধ প্রবণ এ জেলার দৃশ্যপট। গা ঢাকা দিয়েছে অনেক অপরাধী। অপরাধীদের কেউ কেউ পেশা পাল্টে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে শুরু করেছে। পুলিশের কৌঁসুলি ভূমিকার কারণেই ভেঙ্গে পড়েছে অপরাধীচক্রের নেটওয়ার্ক। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির এই উন্নতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, জেলার আইন-শৃঙ্খলার সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়নে ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বিশেষ করে ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ সুপার উত্তম কুমার পাঠক প্রসাদ এর যোগদানের মধ্য দিয়ে ফিরে এসেছে এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, ইতঃপূর্বে এই এই জেলায় ইতঃপূর্বে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ কর্মকর্তা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যেভাবে ভূমিকা নিতেন বর্তমানে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা উত্তম কুমার চৌকস কর্মঠ ও কৌঁসুলি হওয়ায় যুগোপযোগী আধূনিক ডিজিটাল পদ্ধতিতে এবং নিজেই এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রনে ব্যাপকভাবে পরিবর্তনে এনেছেন।জেলার তৃনমূল ইউনিয়ন গুলোতে বসবাসকারী জনসাধারনের লাগালে পুলিশি সেবা পৌঁছে দিতে প্রতিটি ইউনিয়নে বিট অফিসার নিয়োগ করেছেন। তৃণমূল পর্যায়ে ইউনিয়নে বিট অফিসার নিয়োগ করায় পূর্বের চেয়ে অনেক গুণ বেশি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন তৃণমূলের জনসাধারণ।