নেত্রকোনার মদনে মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরিহ মানুষকে হয়রানি করছে শিপন বাহিনী
মিথ্যা মামলার দিয়ে ফাঁদে ফেলে নিরিহ মানুষের জমি দখল করে নেন শিপন ইয়ার খান। এলাকায় সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে রয়েছে তার বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী।
সাঙ্গপাঙ্গদের দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষের পুকুরের মাছ লুট করেন। গাছ কেটে নিয়ে যান। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করেন। কেউ প্রতিবাদ করলে তাদের উপর চড়াও হন শিপন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা।
ভয়ভীতি প্রদর্শন থেকে শুরু মারধর এমনকি মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের জেল খাটান। শিপনের অত্যাচারে শতাধিক নিরিহ মানুষ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
শিপন ইয়ার খান নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার নায়েকপুর গ্রামের পশ্চিম পাড়ার মৃত. গিয়াস উদ্দিনের ছেলে।
শিপনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে এলাকার কয়েকজন ময়মনসিংহ রেঞ্জের উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) ও জেলা পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগকারীরা হলেন, উপজেলার নায়েকপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর মোহাম্মদ খান, শিক্ষক সারোয়ার জামান খান, মজিবুর রহমান খান, ওমর শরীফ খান ও মানিক তালুকদার।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শিপন ইয়ার খান এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছেন। মিথ্যা মামলা দিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে তাদের জায়গা জমি দখলে নেওয়া তার পেশা। এ পর্যন্ত এলাকার ১০টি পরিবারের নামে অর্ধশত মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। তার মিথ্যা মামলা ও অত্যাচারের হাত থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ কোন মানুষই রেহায় পাননি। জাকিয়া আক্তার নামে স্বামী পরিত্যক্তা নারীকে দিয়ে এলাকার মানুষকে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা করান। সাধারণ মানুষকে ঘায়েল করতে ওই নারীকে শিপন মিথ্যা ধর্ষণ মামলার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন।
গত সেপ্টেম্বরে শিপন ইয়ার খানের নির্দেশে জাকিয়া ও সাঙ্গপাঙ্গরা নায়েকপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান খানের (কেনু মাষ্টার) মেয়ে বিউটিকে মারধর করে তার বাড়ির একাংশ দখল করে নেয়। পরে বাড়িতে থাকা বিভিন্ন ধরণের প্রায় তিন লাখ টাকার গাছ কেটে নেয়।
উপজেলার নায়েকপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রহমান খান জানান, আমার পরিবারের সদস্যদের নামে পাঁটি মিথ্যা মামলা করেছে শিপন ইয়ার খান। তার অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ। শিপন শুধু স্থানীয় থানা বা আদালতে মামলা করে কান্ত হননি। নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মামলা দিয়ে এলাকার নিরিহ মানুষকে হয়রানি করছেন।
অভিযোগকারী শিক্ষক সারোয়ার জাহান খান বলেন, আমার পরিবারের সদস্যদের নামে ১০টি মিথ্যা মামলা করেছে শিপন ও তার সহযোগী জাকিয়া। তাদের হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
অভিযুক্ত শিপন ইয়ার খান তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধেই পাল্টা নানা অভিযোগ করেন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও হুমকি দেন তিনি।
মদন থানার ওসি তাওহীদুল ইসলাম জানান, অভিযোগটি পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে সত্যতা পেলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নেত্রকোনার পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহম্মেদ বলেন, অভিযোগটি এখনো পাইনি। তবে অভিযোগ দিয়ে থাকলে এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে মদন থানায় এ বিষয়ে যোগাযোগ করতে পারেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন