পটুয়াখালী-৪ আসনে দুদকের ৩ মামলা নিয়ে এমপি প্রার্থী সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহাবুব
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৪ আসনে আ.লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো: মাহবুবুর রহমান।
তিনি বর্তমানে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ’র কলাপাড়া উপজেলা শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তবে এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের তিনটি মামলা রয়েছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য খেপুপাড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ১০ কোটি টাকা লোপাট এবং সরকারী মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজের ১০ কোটি টাকা লোপাটের দুইটি মামলা আদালতের নির্দেশে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় পটুয়াখালী তদন্ত করছে। আরেকটি মামলা ঢাকা বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে, যা শারিরীক অসুস্থ্যতার গ্রাউন্ডে হাইকোর্টের নির্দেশে বিচার কাজ স্থগিত রয়েছে।
গত ১৫ বছরের ব্যবধানে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীর বার্ষিক আয় বেড়েছে প্রায় ২৮ গুণ। ২০০৮ সালে মাহবুবের বাৎসরিক আয় ছিল ২ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা। ২০২৩ সালে তাঁর বাৎসরিক আয় দাড়িয়েছে ৬০ লক্ষ ৬৫ হাজার ৯৪৩ টাকা। অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে প্রায় ৭ গুণ। ২০০৮ সালে তাঁর অস্থাবর সম্পদ ছিল ৩৬ লক্ষ ৩৩ হাজার ১১২ টাকার। ২০২৩ সালে তাঁর অস্থাবর সম্পদ দাড়িয়েছে ২ কোটি ৫৩ লক্ষ ৯২ হাজার ৫৭৯ টাকার। ২০০৮ সালে স্থাবর সম্পদ ছিল ২০ একর জমি, মূল্য ৫৫ হাজার টাকা এবং রাজউক থেকে প্রাপ্ত ৫ কাঠার প্লট ও ১০ শতাংশ জমির উপর বাড়ির ৪ এর ১ অংশ যার কোনো মূল্য লেখা নাই, ২০২৩ সালে হয়েছে ২৬ একর ৭০ শতাংশ জমি, মূল্য ২ কােটি টাকা, ৬ কাঠা ১৩ ছটাক প্লট মূল্য ৩৯ লক্ষ ২০ হাজার টাকা, ৮ তলা ভবন মূল্য ৫ কোটি ৪৮ লক্ষ ৭২ হাজার ১ শত ১৮ টাকা। মৎস্য খামারে বিনিয়োগ ৮৯ লক্ষ ৫৩ হাজার ৩ শত ৩৩ টাকা এবং যৌথ মালিকানায় ১ একর ও ১০ শতাংশ জমির উপর বাড়ির ৪ এর ১ অংশ। টাকার হিসেবে ২০০৮ সালে ছিল যৌথ মালিকানা ব্যতীত ৫৫ হাজার টাকার সম্পদ যা ১৪৩২ গুন বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩ সালে হয়েছে ৭ কোটি ৮৭ লক্ষ ৯২ হাজার ১ শত ১৮ টাকা। আর তাঁর স্ত্রীর কোনো বার্ষিক আয় না থাকলেও অস্থাবর ১৮ গুণ এবং স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৫ গুণ বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০০৮ সালে নির্বাচনী ব্যয় ১৫ লক্ষ টাকার মধ্যে নিজের ছিল ৩ লক্ষ টাকা, বাকী ১২ লক্ষ টাকা দিয়েছে ভাই, স্ত্রী,সমন্ধি, বন্ধু এবং নগদ টাকা ছিল ৮৩ হাজার ১ শত ১২ টাকা, ২০২৩ সালে ২১০ গুন বৃদ্ধি পেয়ে নগদ ও বন্ডে আছে (১,৩৯,৫৯,৩০৪/- + ৩৫,০০,০০০/-) = ১ কোটি ৭৪ লক্ষ ৫৯ হাজার ৩ শত ৪ টাকা। ২০০৮ সালে ঋন ছিল- ৩,২০,৩৫২/- টাকা, ২০২৩ সালে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক লিঃ, কলেজ গেট শাখা, ঢাকা, ২,২০,৫৬,৯২৯/- টাকা।
২০০৮ সালে স্ত্রীর কোনো আয় কিংবা আয়ের উৎস্ ছিল না তবে তখন তার নামে ৫ লক্ষ টাকার পোস্টাল সেভিংস ছিল, ২০২৩ সালে স্ত্রীর কোনো আয় ও আয়ের উৎস্ না থাকলেও স্ত্রীর অনুকুলে অস্থাবর সম্পদ ১৮ গুন বৃদ্ধি পেয়ে আছে ৯০ লক্ষ ৩৩ হাজার ৩ শত ৫৩ টাকা এবং স্থাবর সম্পদ পূর্বে না থাকলেও বর্তমানে আছে ০.০৭৮৪ একর জমি যার মূল্য দেখানো হয়েছে ২০ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। এছাড়া তাঁর নির্বাচনী এলাকা কলাপাড়ায় সর্বজন জ্ঞাত গঙ্গামতি এন্টারপ্রাইজ নামে খ্যাত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং এর অনুকূলে দখল, অর্জিত ও ভোগকৃত নিজ ও স্ত্রীর সম্পদ, জমি হলফনামায় উল্লেখ নেই।
এর আগে অষ্টম, নবম ও দশম জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে পটুয়াখালী-৪ আসনে এমপি, একবার পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তিঁনি। আর এই সময়ে ব্যপক অনিয়ম দূর্নীতির মাধ্যমে ভাগ্য বদল হয় তাঁর। রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে যান তিঁনি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন