সারাদেশে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি : বাড়ছে মৃতের সংখ্যা

গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সারাদেশে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। পানিতে ডুবে, সাপের কামড়ে ও দেয়াল ধসে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ জনে। এরই মধ্যে রংপুরে বন্যার পানিতে শতাধিক গ্রাম ডুবে গেছে, পানিবন্দী মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরাতে কাজ করছে সেনাবাহিনী।

জামালপুরে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে, সেখানে পানিবন্দী লক্ষাধিক মানুষ।

সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি বেড়ে পৌরসভা পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলায় কয়েক লাখ মানুষ চরম দুর্যোগে দিন কাটাচ্ছে। পর্যাপ্ত ত্রাণের অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে বন্যাদুর্গতরা।

জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ কর্মকর্তা জানান, প্রায় ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার সরকার বরাদ্দ দিয়েছে। বন্যাদুর্গত ৬টি উপজেলায় এ খাবার বিরতণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

দিনাজপুরে বন্যা পরিস্থিতি এখনো অপরিবর্তিত। শিক্ষা বোর্ডের গুদামঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র। এই জেলায় বন্যার পানিতে ডুবে ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

নীলফামারীর সৈয়দপুর শহর রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় সেনানিবাস এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে শহরের কয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। সৈয়দপুর বিমানবন্দরেও বন্যার পানি ঢুকতে পারে বলে আশংকা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

রংপুরের ৩টি উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের একশ’র বেশি গ্রাম ডুবে গেছে। পানির তোড়ে ভেসে গেছে দুই শিশু। পানিবন্দী মানুষকে নিরাপদ স্থানে নিতে কাজ করছে সেনাবাহিনী।

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কালিতলা ও চন্দনবাইশায় যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে যাওয়ায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে রোপা-আমন ধানের বীজতোলা ফসল তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

কুড়িগ্রামে সব নদ-নদীর পানি বেড়ে মহাসড়কে পানি ওঠায় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। সাপের কামড় ও পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে চার জনের।জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের নগদ টাকা ও ৫শ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

শেরপুরে নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতীতে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী।

যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জে অস্বাভাবিক হারে বাড়তে শুরু করেছে। জেলার কাজিপুর, চৌহালি, বেলকুচি, শাহজাদপুর এবং সদর উপজেলার ৪০টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল এবং চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

জামালপুরে দ্বিতীয় দফায় বন্যায় ৩০টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়ে ৩ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী। প্রায় একশ’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এলাকাবাসীকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং করছে স্থানীয় প্রশাসন।