বিএনপিকে ক্ষমা চেয়ে ভোটে আসার আহ্বান শেখ হাসিনার
আগুন সন্ত্রাসের জন্য বিএনপিকে জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে ভোটে আসার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সভায় বক্তব্য দেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।
বিএনপি ২০১৪ সালের মতো আবারও জ্বালাও-পোড়াও শুরু করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগুন নিয়ে খেলা এ দেশের মানুষ পছন্দ করে না। বিএনপি জোটকে বলবো, এই খেলা মানুষ পছন্দ করছে না। মানুষ এটা কখনোই মেনে নেবে না।
বিএনপি-জামায়াত ভোট বানচাল করতে চেয়েছিল মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, সেটিও তারা পারবে না। নির্বাচন জনগণের অধিকার। মানুষ ভোটের মাধ্যমে তার পছন্দের প্রার্থী নির্বাচন করবে।
সব দলকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে আগুন সন্ত্রাসের জন্য বিএনপিকে জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে ভোটে আসার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
গেল ১৪ বছরে দেশে বড় একটা ইতিবাচক পরিবর্তন করা সম্ভব হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে জনপ্রিয়তা ধরে রাখা কঠিন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেই জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পেরেছে। মানুষের অধিকার নিশ্চিত করেছে বলে, আওয়ামী লীগের ওপর মানুষের আস্থা রয়েছে। আর জনগণের ওপর আস্থা রাখতে না পেরে বিএনপি-জামায়াত হামলা চালাচ্ছে।
ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এলে মানুষ তাদের ক্ষমা করে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি এক কোটি ভুয়া ভোটার তৈরি করে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। ’৭৫- এর পর হত্যাযজ্ঞের পাশাপাশি জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া হয় সেনাশাসনের মাধ্যমে। কিন্তু জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সবকিছুই করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। কেননা, আমরা চেয়েছি ভোটের মাধ্যমেই দেশে ক্ষমতার বদল ঘটুক। অস্ত্র হাতে নয়, রাতের অন্ধকারে নয়, ভোটের মধ্য দিয়ে সরকার গঠন হবে বাংলাদেশে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘প্যালেস্টাইনের ওপর ইসরাইয়েল যা করছে, তার প্রতিবাদ করছে বাংলাদেশ। অতিবাম, অতিডান সবাই এখন এক হয়েছে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করতে। আমাদের দোষটা কোথায়?’
যারা অগ্নিসন্ত্রাস করছে তাদের কোনো ক্ষমা নেই জানিয়ে তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, জনগণকে সেবা দেয় এমন কোনো প্রতিষ্ঠান বা স্থাপনায় হামলা করা হলে তা বরদাশত করা হবে না।
‘গার্মেন্টস শ্রমিকদের ৫৬ শতাংশ বেতন বাড়ানোর পরও কেনো কারখানা ভাঙচুর? অন্য সরকারগুলোতো তাদের বেতন বাড়ায়নি’, যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসাকে বিএনপি ইস্যু হিসেবে দেখে। তার নিজের ছেলেই তো দেখতে এলো না একদিনও। ওদের দুর্নীতি-দুঃশাসন তো আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সবার জানা।
শেখ হাসিনা বলেন, পলাতক আসামি তারেক রহমানের হুকুমে যারা অগ্নিসন্ত্রাস করছে, তাদেরকে বলি, খালেদা-তারেক কেউই নির্বাচন করবে না। কিন্তু তাদের হুকুম মেনে যারা সন্ত্রাস করছে, তারা তো অভিশপ্ত হবেন। সাধারণ মানুষকে নির্যাতন করা বিএনপিকে মানুষ আস্থায় নেয় না। জনগণের ওপর হামলা চালানো বিএনপি সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে দেশবাসীকে। এবার আর কোনো ছাড়াছাড়ি নেই।
জ্বালাও-পোড়াওয়ে ভীত না হয়ে তফসিল ঘোষণা দেয়ায় নির্বাচন কমিশনকে সাধুবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, তফসিল হয়ে গেছে। নির্বাচনের দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত। আগুন সন্ত্রাসসহ এতদিনে বিএনপি যা যা করেছে, সেসব অপকর্মের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে নির্বাচনে আসুক তারা।
তিনি বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে যাতে কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারে, সেই ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে সবাইকে।
নির্বাচনের জন্য সবার দরজা খোলা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় বসার আর কোনো সুযোগ নেই। গণতান্ত্রিক ধারার মধ্যে দিয়ে দেশ এগিয়ে যাবে। সাধারণ মানুষকে বললে তারাই বলবে, তারা কাকে পছন্দ করে। তারা বলবে আওয়ামী লীগকে পছন্দ করে।
এবারের নির্বাচনি ইশতেহারের মূল লক্ষ্য থাকবে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার, জানান শেখ হাসিনা।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন