বিশেষ মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হলো সিলেটের ফুলতলী ঈসালে সাওয়াব
সিলেটের বরণ্য আলীম সাহেব কিবলা ফুলতলির প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর ঈসালে সাওয়াব অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফুলতলী ছাহেব বাড়ি সংলগ্ন বালাই হাওরে অনুষ্ঠিত হলো আল্লামা ফুলতলী (র.)-এর ১৫তম ইন্তেকাল বার্ষিকী উপলক্ষে ঈসালে সাওয়াব মাহফিল এ আয়োজন করা হয়।
রোববার (১৫ জানুয়ারী) ফজরের নামাজের পর থেকে শুরু হয় বয়ান। পরে ১৬ (জানুয়ারী) সোমবার ফজরের নামাজের পর বিশেষ মোনাজের মাধ্যমে ওই ইসালে সওয়াব সম্পন্ন হয়।
এতে তা’লীম-তরবিয়ত পেশ করেন আল্লামা ফুলতলী (র.)-এর উত্তরসূরী আল্লামা ইমাদ উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী।
তিনি বলেন, আল্লামা ফুলতলী (র.) একদিকে কুরআন-হাদীস শিক্ষা দিয়েছেন, অন্যদিকে নির্জনে আল্লাহর যিকরে সময় কাটিয়েছেন। যারা সিলসিলার সাথে সম্পৃক্ত আপন মুরশিদের নির্দেশনায় মাঝে মধ্যে নির্জনবাসের চেষ্টা করবেন। হিযবুল বাহার, দালাইলুল খাইরাত পড়বেন। সর্বোপরি সর্বাবস্থায় শরীয়তের অনুসরণ করবেন। যিকরের ক্ষেত্রে তরীকার অনুসরণ করবেন। সিলসিলার নামে ভণ্ডামি করলে সিলসিলার ফয়েয থেকে বঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ফুলতলী (র.) ইলমে কিরাতের সনদ দিয়েছেন, হাদীস শরীফের সনদ দিয়েছেন। এগুলোর মাধ্যমে মদীনার সাথে তাআল্লুক সৃষ্টি হয়েছে। যথাসম্ভব এসব সনদের হক আদায় করবেন। তিনি উপস্থিত সকলকে নসীহত করে বলেন, মা-বাবার খিদমত করুন। তাদের দু’আ নিন। তারা দুনিয়ায় না থাকলে তাদের জন্য দু’আ করুন। হিংসা-বিদ্বেষ থেকে দূরেম থেকে ভালোবাসার পরিবেশ তৈরি করুন।
হাজার-হাজার মানুষের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এ মাহফিল ভোরে আল্লামা ফুলতলী (র.)-এর মাজার যিয়ারতের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। যুহরের পর কানায় কানায় পূর্ণ হয় মাঠ। খতমে কুরআন, খতমে বুখারী, খতমে খাজেগান, খতমে দালাইলুল খাইরাতের পাশাপাশি স্মৃতিচারণমূলক ও জীবনঘনিষ্ট আলোচনায় অত্যন্ত ভাবগম্ভীর পরিবেশে অতিবাহিত হয় পুরো দিন।
বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী ও মাওলানা আহমদ হাসান চৌধুরী ফুলতলীর পরিচালনায় মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মুসলিম হ্যান্ডস ইন্টারন্যাশনাল এর চেয়ারম্যান সায়্যিদ লখতে হাসানাইন, পাকিস্তানের প্রখ্যাত বুযুর্গ গোলাম জিলানী, ভারতের উজানডিহির পীর মাওলানা সায়্যিদ মোস্তাক আহমদ আল মাদানী, সায়্যিদ জুনাইদ আহমদ আল মাদানী, বাদেদেওরাইল ফুলতলী কামিল মাদরাসার অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আল্লামা নজমুদ্দীন চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও ফার্সি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মহাসচিব মাওলানা শাব্বির আহমদ মোমতাজী, নেছারাবাদের পীর মাওলানা খলীলুর রহমান নেছারাবাদী, ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদরাসা’র অধ্যক্ষ ড. মাওলানা এ কে এম মাহবুবুর রহমান, ভান্ডারিয়া কামিল মাদরাসা, রাজবাড়ী এর অধ্যক্ষ মাওলানা আবুল এরশাদ মো. সিরাজুম মুনির, ঢাকা দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদরাসা অধ্যক্ষ মাওলানা আ. খ. ম আবু বকর সিদ্দীক।
মাহফিলে বক্তব্য রাখেন মাওলানা শিহাব উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী, মুফতী মাওলানা গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী, হযরত শাহজালাল দারুচ্ছুন্নাহ ইয়াকুবিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা কমরুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী, বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা এ.কে.এম মনোওর আলী, ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি সিলেট এর উপপরিচালক মাওলানা শাহ নজরুল ইসলাম, ইয়াকুবিয়া হিফযুল কুরআন বোর্ডের জেনারেল সেক্রেটারি হাফিয মাওলানা ফখরুদ্দীন চৌধুরী, জালালপুর জালালিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা জ.উ.ম আব্দুল মুনঈম, প্রবাসী আলেমে দ্বীন মাওলানা আবূ আব্দিল্লাহ মো. আইনুল হুদা, জকিগঞ্জ সিনিয়র মাদরাসার সহকারী অধ্যাপক মাওলানা মোশাহিদ আহমদ কামালী, মহাখালী কামিল মাদরাসা মুহাদ্দিস মাওলানা মাহবুবুর রহমান, মৌলভীবাজার টাউন কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা মুহিবুর রহমান, রাখালগঞ্জ সিনিয়র মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা শেহাব উদ্দিন আলীপুরী, দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা বদরুজ্জামান রিয়াদ, মুফতি মাওলানা শাহ আলম প্রমুখ।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাবেক এমপি শফিকুর রহমান চৌধুরী, জকিগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মাসুক উদ্দিন আহমদ ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন চৌধুরী।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন