বৃষ্টিতে ভেসে গেল ম্যাচ, তবু সুপার ফোরে পাকিস্তান

এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান হাই-ভোল্টেজ ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত বৃষ্টিই জিতল।

ভারতকে ২৬৬ রানে গুটিয়ে দিয়ে তাড়া করতে নামার অপেক্ষায় ছিল পাকিস্তান। কিন্তু ক্যান্ডির বৃষ্টি আর সেটি হতেই দেয়নি। মাত্র এক ইনিংস খেলা হওয়ায় ভারত-পাকিস্তান ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচটি শেষ হয়েছে মিমাংসা ছাড়াই। ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ায় পয়েন্ট ভাগাভাগি করে নিয়েছে দুই দল।

জয় না পেলেও পাকিস্তানের অবশ্য অর্জন আছে। আগের ম্যাচে নেপালকে হারানো দুই আর আজকের ১ মিলিয়ে তিন পয়েন্ট নিয়ে সুপার ফোরে উঠে গেছে বাবর আজমের দল।

এর আগে ভারতের ইনিংসে ছিল মোটের ওপর দুটি অধ্যায়। শুরু আর শেষ দিক মিলিয়ে ইনিংসের অর্ধেক ওভারে ছড়ি ঘোরান পাকিস্তানের তিন পেসার। আর বাকি অর্ধেকে প্রতিরোধের গল্প লেখেন ভারতের দুই ব্যাটসম্যান।

টস জিতে ভারত ব্যাটিং নেওয়ার পর সবার কৌতূহল ছিল শাহিনের বল রোহিত কীভাবে সামাল দেন। প্রথম দুই ওভার সামাল দিতে পারলেও পরের ওভারে পারেননি রোহিত। শাহিনের ইন সুইং ভারত অধিনায়কের ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে আঘাত হানে স্টাম্পে। কিছুক্ষণ পর শাহিনের শিকার হয়ে ফিরতে হয় কোহলিকেও। নাসিমকে চার মেরে দারুণ শুরুর ইঙ্গিত দেওয়া কোহলি শাহিনের অফ স্টাম্পের বাইরের বল ব্যাট-প্যাড হয়ে স্টাম্পে টেনে এনে বোল্ড হন।

একই প্রান্তে শাহিনের বদলি হয়ে বল করতে এসে হারিস রউফও তুলে নেন জোড়া উইকেট। প্রথমে চারে নামা শ্রেয়াস আইয়ারকে, এরপর রান তুলতে হিমশিম খাওয়া শুবমান গিলকে। আইয়ার পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে ফখরের ক্যাচ হওয়ার আগে করেন ৯ বলে ১৪ রান, আর ওপেনিংয়ে নামা গিল বোল্ড হন ৩২ বলে ১০ রান করে।

পনেরোতম ওভারে ৬৬ রান তুলতে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলা ভারতের ইনিংসকে মেরামতের কাজটা হয় পঞ্চম উইকেটে ঈশান কিষান ও হার্দিক পান্ডিয়ার জুটিতে। প্রথমে দেখেশুনে খেলে বিপর্যয় সামাল এরপর থিতু হয়ে রান তোলায় মনোযোগ দেন দুজনে। তুলে নেন ব্যক্তিগত ফিফটিও। কিষান-পান্ডিয়ার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারেননি পাকিস্তানের স্পিনাররাও। শাদাব খান, মোহাম্মদ নওয়াজ আর আগা সালমানদের নির্বিষ বোলিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডিং দুর্বলতাও ছিল চোখে পড়ার মতো।

কিষান তাঁর টানা চতুর্থ ওয়ানডে ফিফটি পূর্ণ করেন ৫৪ বলে, হার্দিকের লাগে ৬২ বল। ৩৭ ওভার শেষে ৪ উইকেটে ২০৩ রান তোলা ভারতের সামনে তখন তিন শ তোলারও হাতছানি। তবে রউফকে পুল করতে গিয়ে কিষান মিড অনে ক্যাচ তুলে দিলে সেই সম্ভাবনায় ব্যাঘাত ঘটে। ৮১ বলে ৮২ রান করা কিষানের বিদায়ে ভাঙে ১৪০ বলে ১৩৮ রানের জুটি, যা ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি লড়াইয়ে পঞ্চম উইকেট বা তাঁর ওপরের জুটিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ (১৯৮৭ সালে নাগপুরে ইমরান খান-জাভেদ মিয়াঁদাদের ১৪২ সর্বোচ্চ)।

পেস বোলিংয়ে ভারতের সফল জুটি ভাঙার পর পাকিস্তান অধিনায়ক স্পিনারদের ওপর আর বেশিক্ষণ ভরসা করেননি। আক্রমণে ফেরানো হয় নাসিম ও শাহিনকে। তৃতীয় স্পেলে ফিরে প্রথম বলেই পান্ডিয়াকে স্লোয়ার দেন শাহিন, ড্রাইভ করতে গিয়ে কাভারে সালমানের ক্যাচে পরিণত হন ৯০ বলে ৮৭ রান করা পান্ডিয়া। এরপর আর রান করার কেউ ছিল না ভারতের। গতির ঝড় তুলে নাসিম শেষ দুই উইকেট তুলে নিলে ৪৯তম ওভারেই শেষ হয়ে যায় ভারতের ইনিংস। ২৭ রানে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে ভারত থামে ২৬৬ রানে।

পাকিস্তানের তিন পেসার ভাগাভাগি করে নেন দশ উইকেট। ১০ ওভারে ৩৫ রান দিয়ে ২ মেডেনসহ ৪ উইকেট শাহিনের, নাসিম ও রউফের শিকার ৩টি করে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত: ৪৮.৫ ওভারে ২৬৬ (পান্ডিয়া ৮৭, কিষান ৮২, বুমরা ১৬; শাহিন ৪/৩৫, নাসিম ৩/৩৬, রউফ ৩/৫৮)।

পাকিস্তান: ব্যাটিং করতে পারেনি।

ফল: পরিত্যক্ত