মমতার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন গুড়েবালি!
ভারতের তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, আগামী বছরই হবে মোদির অন্তিম বছর। মোদিকে পরাস্ত করে ক্ষমতায় আসবে বিরোধী জোট। তাঁর কথা ধরে অনেক তৃণমূল নেতা স্বপ্ন দেখছেন, মমতাই হতে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তবে সে আশায় গুঁড়েবালি বলে মন্তব্য করেছেন মমতার একসময়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ও বর্তমানে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া মুকুল রায়। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, সারা দেশে কটি আসন পাবে তৃণমূল?
ভারতজুড়ে এখন একটা মোদিবিরোধী হাওয়া চলছে। কমছে প্রধানমন্ত্রী মোদির জনপ্রিয়তা। দেশের বিভিন্ন উপনির্বাচনে সে ছবি ভেসেও উঠছে। জনমত সমীক্ষায় একই আভাস দেওয়া হয়। ভারতে ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট বাতিল, জিএসটি চালু, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বেকার সমস্যার সমাধান না হওয়া, সাম্প্রদায়িকতা বৃদ্ধির ঘটনাকে মেনে নিতে পারেনি দেশবাসী। তাই ক্ষমতায় আসার চার বছর পর উল্টো হওয়া বইছে। মোদির জনপ্রিয়তায় ভাটা দেখে বিরোধীরা এককাট্টা হয়ে মাঠে নেমেছে।
কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজপার্টি, রাষ্ট্রীয় জনতা দল, তেলেগু দেশম ও বাম দলের একই সুর। এর মধ্যে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দৌড়ঝাঁপ করছেন বেশি। মমতার দলের নেতা, মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়কেরা বলতে শুরু করেছেন, ভবিষ্যতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হবেন মমতাই। কারণ, বিরোধী দল এখন মোদিবিরোধী আন্দোলনে মমতাকে নেত্রী হিসেবে মেনে নিয়েছেন। মমতাও বারবার বলেছেন, ‘এবারে আমাদের লক্ষ্য দিল্লি দখল আর মোদি সরকারকে হটানো।’
মমতা কি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন? বিরোধী অন্যান্য দলের নেতারা কি মেনে নেবেন মমতাকে? এ প্রশ্ন উঠছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সাবেক নেতা মুকুল রায় গত রোববার বাঁকুড়ার এক সমাবেশে বলেছেন, তৃণমূল তো সারা দেশের ৫৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৪২টি আসনের বেশি আসনে প্রার্থী দিতে পারবে না। পশ্চিমবঙ্গে লোকসভার রয়েছে ৪২টি আসন। আর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার গড়তে প্রয়োজন ২৭২টি আসন। কীভাবে মমতা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন?
মুকুল রায় বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমর্থনের জন্য কখনো চন্দ্র বাবু নাইডুর কাছে, আবার কখনো ওডিশায় ছুটে বেড়াচ্ছেন। ভাবছেন, যদি আই কে গুজরালের মতো কোনোভাবে একবার প্রধানমন্ত্রী হওয়া যায়? কিন্তু সে গুড়ে যে বালি। পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র শেষ করে দিয়েছিল সিপিএম। সেই অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা পরিবর্তন চেয়েছিলাম। কিন্তু দেখা গেল, বাড়ি থেকে লাঠি নিয়ে চোর তাড়াতে গিয়ে ডাকাত এসে পড়েছে। তৃণমূল সরকার শুধু এই রাজ্যের গণতান্ত্রিক পরিবেশই নয়, দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকেই ভেঙে দিয়েছে।’
১৯৯৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা দেশের প্রথম একজন বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল। তিনি ছিলেন সিপিএম নেতা ও পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু। কিন্তু দল তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদে বসানোর অনুমতি দেয়নি। তবে ভারতের স্বাধীনতার দীর্ঘ ৬৫ বছর পর প্রথম একজন বাঙালির রাষ্ট্রপতি হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন কংগ্রেস দলের প্রবীণ নেতা প্রণব মুখোপাধ্যায়।
বিজেপি বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসে ২০১৪ সালে। প্রধানমন্ত্রী হন নরেন্দ্র মোদি। দলটির নেতারা মনে করেন, আগামী বছর অনুষ্ঠেয় ভারতের পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ফের ক্ষমতায় থাকছে। তবুও প্রশ্ন উঠে এসেছে, সত্যি কি তা-ই? সত্যি কি বিজেপি ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় থাকতে পারবে? পারবে কি তাদের দুর্গ রক্ষা করতে? নাকি মমতাকে দেখা যাবে ক্ষমতায়। আগামী বছরের নির্বাচনে তা দেখা যাবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন